বগুড়ার সদরের গোকুল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘটে একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত হন মিজান, যিনি গোকুল উত্তরপাড়ার বাসিন্দা এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নেতা ছিলেন। নিহত মিজানের বাবার নাম আফসার আলী।
সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে মিজান তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে গোকুল বন্দরের গোডাউন এলাকায় গল্প করছিলেন। এটি ছিল একটি স্বাভাবিক সন্ধ্যা, যেখানে মিজান ও তার বন্ধুরা স্থানীয় কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। হঠাৎ, প্রায় ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল যোগে একদল দুর্বৃত্ত সেখানে এসে হাজির হয়। তাদের আচরণ ছিল সন্দেহজনক এবং দ্রুতই তারা মিজানকে ঘিরে ফেলে।
দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মিজানের ওপর আক্রমণ চালায়। তারা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মিজানকে গুরুতর আহত করে। আক্রমণটি ছিল এতটাই তীব্র ও হিংস্র যে মিজান ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঘটনাটি ঘটে খুব অল্প সময়ের মধ্যে, এবং আক্রমণকারীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। তাদের মোটরসাইকেলের আওয়াজ দ্রুত মিলিয়ে যায়, এবং এলাকায় নেমে আসে এক গভীর নীরবতা।
ঘটনার পরপরই স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং মিজানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে, যেখানে দুর্বৃত্তরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিজানকে আক্রমণ করতে এসেছিল।
পুলিশ এখনো হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ এবং দায়ীদের শনাক্ত করতে কাজ করছে। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়া, ঘটনার সময় উপস্থিত মিজানের বন্ধুদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত শত্রুতা থাকতে পারে।
এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা এলাকায় টহল দিচ্ছে যাতে আর কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না হয়। এলাকাবাসীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে যে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
মিজানের নির্মম হত্যাকাণ্ড বগুড়ার গোকুল ইউনিয়নে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের এই নেতার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতায় এলাকাবাসী আশা করছে যে দ্রুতই এই হত্যাকাণ্ডের দায়ীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে এবং এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।