সুগন্ধায় ট্যাংকারে বিস্ফোরণ: উদ্ধারে উদাসীনতার অভিযোগ, একজনের মরদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো. নাঈম হাসান ঈমন, জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: রবিবার ২রা জুলাই ২০২৩ ০৮:১৩ অপরাহ্ন
সুগন্ধায় ট্যাংকারে বিস্ফোরণ: উদ্ধারে উদাসীনতার অভিযোগ, একজনের মরদেহ উদ্ধার

ঝালকা‌ঠি‌র সুগন্ধা নদীতে তে‌লবাহী জাহাজে (ট্যাংকার) বিস্ফোরণের ঘটনায় নিখোঁজ চারজনকে উদ্ধারে উদাসীনতার অভিযোগের মধ্যে পাওয়া গেছে গ্রিজার মো. হৃদয়ের মরদেহ।


বিস্ফোরণের এক দিন পর রোববার (২জুলাই) বেলা পৌনে ৩টার দিকে হৃদয়ের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড। ২৭ বছর বয়সী হৃদয়ের বাড়ি হবিগঞ্জে।


কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট শাফায়েত হোসেন বলেন, ‘জাহাজের পেছনে নিচের দিকে পানি ছিল। সেই পানি অপসারণ করার পরই লাশটি জেগে ওঠে। হৃদয়ের স্বজনরা লাশ শনাক্ত করেছে।’


ঝালকাঠি সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। যাবতীয় কার্য শেষে নিহতের মামা শফিকুল ইসলামের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।’


এদিকে জাহাজ দুর্ঘটনায় এখ‌নও মাস্টার রুহুল আমিন, ইঞ্জিন ড্রাইভার মাসুদুর রহমান বেলাল ও সুকানি আকরাম হোসেন সরওয়ার নি‌খোঁজ র‌য়ে‌ছেন।


অপরদিকে লাশ উদ্ধারে উদাসীনতার অভিযোগ স্বজনদের। ট‌্যাংকার বি‌স্ফোরণের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও নিখোঁজদের উদ্ধা‌রে কর্তৃপক্ষের যথাযথ তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা, তবে তাদের উদ্ধারে তৎপরতা চলছে বলে দাবি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের।


শনিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পদ্মা অয়েল কোম্পানির জ্বালানি তেলবাহী ট্যংকার ‘ওটি সাগর নন্দিনী-২’ বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনায় জাহাজের পেছনের তিন তলাবিশিষ্ট চালকের কক্ষ ও কেবিনের অংশ উড়ে গিয়ে পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর পর থেকে জাহাজের মাস্টার রুহুল আমিন, সুকানি আকরাম হোসেন, ড্রাইভার মাসুদুর রহমান বেলাল ও গ্রিজার মো. হৃদয় নিখোঁজ ছিলেন।


নিখোঁজদের উদ্ধারকাজে সন্তুষ্ট নন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। মাস্টার রুহুল আমিনের ভাই মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর গতকাল থেকে তেল অপসারণ নিয়েই ব্যস্ত সরকার পক্ষ, কিন্তু নিখোঁজদের উদ্ধারে তাদের তৎপরতা নেই।’


ট্যংকারের নিখোঁজ ড্রাইভার মাসুদুর রহমান বেলালের ভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাইয়ের সন্ধানে সকাল থেকে বসে আছি। জাহাজের নিমজ্জিত অংশ উদ্ধারকারী ক্রেন দিয়ে ওপরে তুলে আনলেই কেবিনে থাকা সকলের মরদেহ পাওয়া যেত, কিন্তু সে কাজের কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।’


সুকানি আকরাম হোসেনের ভাই মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘ভাইকে খুঁজতে এসেছি। তাকে জীবিত বা মৃত উদ্ধার করেই এখান থেকে যাব, কিন্তু ঠিক কী কারণে ক্রেনযুক্ত উদ্ধারকারী জাহাজ ২৪ ঘন্টায়ও ঘটনাস্থলে আসেনি, তা আমার জানা নেই।’


ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঝালকাঠির স্টেশন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা উদ্ধারকাজ শুরু করেছি। ডুবে যাওয়া জাহাজের বিধ্বস্ত অংশ শনাক্ত করতে সময় লেগেছে।’