ষষ্ঠ-নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে শিখনকালীন মূল্যায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: বুধবার ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৫৪ অপরাহ্ন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে শিখনকালীন মূল্যায়ন

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার সঙ্গে শিখনকালীন মূল্যায়ন যুক্ত করার নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) এই নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, বার্ষিক পরীক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন মূল্যায়নও অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যা শিক্ষার্থীদের সার্বিক মূল্যায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।


নতুন কারিকুলামের আলোকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে এবং সেই অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা নিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীরা ৭০ নম্বরের প্রশ্নপত্রে তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় অংশ নেবে, আর বাকি ৩০ নম্বর শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন মূল্যায়নের ভিত্তিতে প্রদান করা হবে। 


শিখনকালীন মূল্যায়ন হল শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন সময়ের কার্যকলাপ, বিভিন্ন ছোটখাটো পরীক্ষা, শ্রেণিকক্ষে অংশগ্রহণ, প্রকল্প বা অ্যাসাইনমেন্টের উপর ভিত্তি করে নম্বর প্রদান। এটি শিক্ষার্থীর নিয়মিত কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে তার পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করবে। ফলে শিক্ষার্থীদের শুধু বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে না; বরং তাদের সার্বিক শিখন দক্ষতা, প্রতিদিনের অংশগ্রহণ এবং ক্লাসের কার্যকলাপকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।


এনসিটিবির নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমাতে এবং তাদের শিখন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করতে সহায়ক হবে। নতুন কারিকুলামের ভিত্তিতে তৈরি করা বইগুলোর ওপরেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে। এতে শিক্ষার্থীরা বইয়ের প্রতিটি অধ্যায় ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অর্জনে উৎসাহিত হবে।


‘২০২৪ সালের শিখনকালীন মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশিকায়’ আরও কিছু নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্রমাগত উন্নয়ন এবং শিখন দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়, শিক্ষকদের শিখনকালীন মূল্যায়নে গুণগত মান বজায় রাখতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।


নির্দেশিকাটি প্রকাশের পর শিক্ষাবিদদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা মনে করছেন, এই নতুন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞানার্জনকে আরও গভীর করবে এবং শুধু পরীক্ষার নম্বরের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে। শিক্ষার্থীরা এখন থেকে নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন শিখনমূলক কার্যক্রমে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবে। 


এনসিটিবি জানিয়েছে, নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের উপর কোনো অতিরিক্ত চাপ তৈরি হবে না। বরং শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসের মাধ্যমে তাদের মূল্যায়ন পাওয়ার সুযোগ পাবে। এই নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আরও দায়িত্বশীল হয়ে উঠবে এবং তাদের শিখন প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, "এই নতুন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে একটি সমন্বিত ও শিখনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।"পূর্ণ নির্দেশিকা দেখতে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে ক্লিক করার জন্য একটি লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে, যা শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের জন্য সহজলভ্য।