দেবীদ্বারে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগে কারাগারে বড়হুজুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: সোমবার ১২ই জুন ২০২৩ ১১:১৯ পূর্বাহ্ন
দেবীদ্বারে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগে কারাগারে বড়হুজুর

কুমিল্লার দেবীদ্বারে ইক্বরানগরী ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসায় ৫ম এবং ৭ম শ্রেনীতে পড়ুয়া ১৩বছর ও ১৪বছর বয়সী ২শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের বড়হুজুর ও মাদ্রাসা পরিচালক হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার পূর্বক রবিবার সকালে কোর্ট হাজতে চালান করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত মোঃ হাবিবুর রহমান দেবীদ্বার পৌরসভা গুনাইঘর ইক্বরানগরী এলাকার ইউনুস খানের পুত্র।


অভিযুক্ত ধর্ষককে রবিবার সকাল ১১টায় কুমিল্লার ৪নং আমলী আদালতে হাজির করা হলে বিকেল ৩টায় বিচারক শারমিন রিমা তাকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন এবং ভিক্টিমদ্বয়কে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আদালতে হাজির করা হলে, বিচারক ২২ ধারায় ভিক্টিমের জবানবন্ধী রেকর্ড করেন।


মামলার বাদী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভিক্টিমদ্বয় ইক্বরানগরী ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসায় ৫ম ও ৭ম শ্রেণীতে আবাসিক হোষ্টেলে থেকে লেখাপড়া করতো। ভিক্টিমদ্বয়ের মধ্যে একজনের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার নোয়াগাও গ্রামে ও অন্যজন বাঙ্গরা বাজার থানার ধনপ্রতিখোলা গ্রাম। এরা সম্পর্কে খালাতো বোন।


গত ৮জুন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ১ম ভিক্টিম ছদ্মনাম সুমি(১৪)কে হোষ্টেলে গিয়ে অভিযুক্ত বড়হুজুর হাবিবুর রহমান ডেকে বাড়ি থেকে ফোন আসছে বলে মাদ্রাসার নিচতলা ক্লাসরুমে নিয়ে জোরপূর্বক কাপড়চোপড় খুলে ধর্ষণ করে। পরে ভিক্টিমকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন বলে তখন কাউকে জানায়নি। পরবর্তিতে ৯জুন আনুমানিক ভোর ৪টায় অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান মাদ্রাসার আবাসিক হোষ্টেলে গিয়ে কলিংবেল চাপলে ২য় ভিক্টিম ছদ্মনাম রুমি(১৩) দরজা খুলে। তখন ভিক্টিমকে জানানো হয় তার বাড়িতে কেউ মারা গেছে, এই খবরে হোষ্টেলের দায়িত্বে থাকা হালিমা মেডামকে ভিক্টিম ডেকে বললে ওনি প্রস্তুত হওয়ার জন্য বাইরে গেলে অভিযুক্ত বড়হুজুর হোষ্টেল রুমে প্রবেশ করে জোরপূর্বক ধর্ষন করে তার কামলালসা পূর্ণ করে।


এসময় হালিমা মেডাম চলে আসলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। সকালে ভিক্টিম রুমি মাদ্রাসা হইতে পালাইয়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পিছনে ভিক্টিমদের ভাড়া বাসায় এসে কান্না করতে থাকলে তার মায়ের জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলে। ওই ঘটনায় ২য় ভিক্টিম রুমির বাবা বাদী হয়ে ১০জুন শনিবার বিকেলে দেবীদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মোঃ হাবিবুর রহমানকে একমাত্র আসামী করে মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইক্বরানগরী বাসা থেকে শনিবার রাতেই তাকে আটক করে।


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রেজওয়ানুল ইসলাম রবিবার সন্ধ্যায় জানান, মামলার পর আসামী গ্রেফতার করে আজ কোর্টে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং ভিকটিমদের মেডিকেলে পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্ন করে আদালতে ২২ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। আসামী ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছেন।


দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, আসামী গ্রেফতার পূর্বক কুমিল্লা কোর্ট হাজতে চালান করা হয়েছে। ভিকটিমদের ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।