কুমিল্লার দেবীদ্বারে দু’গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ২০টি বাড়ি-ঘর ও দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই গ্রুপের প্রায় ৩০জন সমর্থক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে উপজেলার বড়শালঘর ইউনিয়নের ছোটশালঘর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার ছোটশালঘর গ্রামে আলম হাজারী মেম্বার ও ফরিদ উদ্দিন গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। গত এক সপ্তাহ পূর্বে হাজারী বাড়িতে বেড়াতে আসা এক জামাইর নিকট থেকে একটি মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে ফরিদ উদ্দিন গ্রুপের সমর্থক গাজী খলিলুর রহমানের পুত্র আরমান (২১)কে মারধর করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার ওই দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার রাতে স্থানীয় বড়শালঘর ইউএম এ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান সরকারের উপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত করে আলম হাজারী মেম্বারের সমর্থকরা। এ নিয়ে শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে দু’দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ফরিদ উদ্দিন গ্রুপের প্রায় ১৫টি এবং আলম হাজারী গ্রুপের ৫টি বাড়ি-ঘর ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের প্রায় ৩০ সমর্থক আহত হয়েছে। ফরিদ উদ্দিন গ্রুপের গুরত্বর আহত সমর্থক মোঃ গোলাম মোস্তফা (৫০), রানা সরকার(৩০), ফারুক খান (৩৪) ও সালমান সরকার (৩০) কে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মোহন সরকার ও তমাল সরকারকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে আলম হাজারী মেম্বার গ্রুপের সমর্তক জাহাঙ্গীর হাজারী (৫৫), দুলাল মিয়া (৪০) ও গিয়াস উদ্দিন (৪০) কে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ছোটশালঘর জৌরদ্ধী বাড়ির মাহবুব আলম বলেন, র্দীঘদিন ধরে গ্রামে দু’গ্রুপের আধিপত্য নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। কিন্তু আমরা কারো পক্ষে না নেওয়ায় আলম হাজারী মেম্বার গ্রুপের লোকজন এসে আমাদের বাড়ির ৬টি ঘর ও একটি দোকান ভাংচুর করে এবং রাতে এসে আমাদের মারধর করার হুমকী দিয়ে যায়।
আলম হাজারী মেম্বার বলেন, গত ৮-১০ দিন পূর্বে আমাদের বাড়িতে একজন জামাই বেড়াতে আসলে তার নিকট থেকে আরমান একটি মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। ওই সময় স্থানীয়রা আরমানের নিকট থেকে চুরি হওয়া মোবাইলটি উদ্ধার করে এবং তাকে কিছু কিলগুশি দিয়ে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে তারা এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায়। আমাদের লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর করে এবং ১০ জনকে আহত করেছে। তাদের মধ্যে দেবিদ্বার হসপিটালে ৩ জন ভর্তি রয়েছে, বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে এসেছে।
চুরির ঘটনা অস্বীকার করে ফরিদ উদ্দিন বলেন, হামলার ঘটনাটি ভিন্নখ্যাতে নিতে তারা চুরির অভিযোগ তুলছে। মূলত পেশীশক্তি দেখাতে আলম হাজারীর লোকজন আমাদের লোকজন ও নিরিহ কিছু গ্রামের মানুষের ১৫টি বাড়ি-ঘর ভাংচুর এবং ২০ জনকে আহত করে। তারা কুমিল্লা ও দেবীদ্বার হাসপাতলে ভর্তি রয়েছে।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কোন পক্ষ অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগপত্র দিলে মামলা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।