মোবাইল ব্যবহার করায় মাদ্রাসা ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন পরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শনিবার ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:০৭ অপরাহ্ন
মোবাইল ব্যবহার করায় মাদ্রাসা ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন পরিচালক

মোবাইলফোন ব্যবহার করায় মো. হাসিবুর রহমান নামের এক ছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে।


এতে ওই ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়ে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আহতের ভাই মো. মনির হোসেন।


আহত হাসিবুর বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার উত্তর দেহেরগতি গ্রামের কৃষক আবু সালাম হাওলাদারের ছেলে।


হাসিবুর বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ তেমাথা এলাকায় অবস্থিত তাহফিজুল মিল্লাত ক্যাডেট মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র।


ওই মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তাকে পেটানোর ঘটনা ঘটে।


আহতের ভাই মনির হোসেন  বলেন, মাদ্রাসায় মোবাইলফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ। ভাই মাদ্রাসায় একটি মোবাইলফোন নিয়ে যায়। মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম ফোনটি জমা নিয়ে নিজে ব্যবহার করতে থাকেন। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাবা ফোনটি ফেরত আনতে মাদ্রাসায় যান। তাকে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে ফোনসেটটি ফেরত দেননি।


মনিরের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাই হাসিবুরকে মাদ্রাসার সিঁড়ির কাছে দেখতে পেয়ে বকাবকি করেন মাদ্রাসার পরিচালক শফিকুল ইসলাম। একপর্যায়ে হাসিবুরকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেছেন মাদ্রাসার পরিচালক শফিকুল ইসলাম। পরে হাসিবুরকে মাদ্রাসায় আটকে রাখেন তিনি। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর অসুস্থ অবস্থায় হাসিবুর বাড়িতে আসে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।


এ ঘটনায় আহতের মামাতো ভাই কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষেদের (ইউপি) দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুমন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।


কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিক জানান, অভিযোগ পেয়ে মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম। কিন্তু হুজুরকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইলফোনে কথা হয়েছে। তিনি যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।


শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম মোবাইলফোনে জানান, বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে গতরাতে এবং আজ সকাল এ নিয়ে হাসিবুরের পরিবার ও থানা পুলিশের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।


মাদ্রাসার পরিচালক বলেন, বিষয়টি খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা। এজন্য আমিসহ সবাই দুঃখ প্রকাশ করছি। মূলত এই ছেলেটি পাঁচ বছর ধরে এখানে পড়ছে, কখনো কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায়নি। তবে সবশেষ সে ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকার পরও মাদ্রাসায় মোবাইলফোন নিয়ে আসে। মেয়েদের সঙ্গে ফোনে কথা বলা, ভিডিও দেখা, রাতে অন্যদের ঘুম থেকে উঠিয়ে একসঙ্গে ভিডিও দেখাসহ নানান ঘটনা ঘটাচ্ছিল। আমরা চাচ্ছিলাম ছেলেটা লেখাপড়ায় যেহেতু ভালো তাই তাকে গাইড দেওয়ার। তাকে ভালো করার সর্বোচ্চ ট্রাই করছি।