নওগাঁর মহাবেদপুর উপজেলার মাতাজীহাটে অনুমোদহীন নিউ ডে নাইট বেকারী এন্ড কনফেকশনারী নামের কারখানায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুমোদনবিহীন এ কারখানাটির মালিক স্থানীয় নান্দাস গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান। কারখানাটির অনুমোদন না থাকলে অবৈধ এ কারখানাটির খবর রাখেনা কোনো কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, টিনের ছাপড়া একটি ঘর। দেখে পরিত্যক্ত মনে হলেও ধোয়া উড়তে দেখে মনে হয় ভিতরে কোন কিছু তৈরি হচ্ছে ভিতরে। এসময় ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, অন্ধকার ঘরে স্যাঁতসেঁতে ও নোংরা মেঝের ওপরে খোলা পাত্রে রাখা হয়েছে কেক, রুটি ও বিস্কুট। মেঝের উপড়ে আড়ার সাথে ঝুলছে মাকড়সার জাল। মেঝের এক পাশে তৈরি করা হয় খাবার আরেক পাশে রাখা হয় কারখানার চুলার ময়লা। একটি টিনের বালটিতে রাখা হয়েছে তেল। সেই একই তেল দিয়ে অনেক রকম খাবার তৈরি করার কারনে তেল ঘোলাটে হয়ে গেছে। কড়াইয়ে সামন্য তেল রয়েছে সেখানে সিগারেট গেয়ে অবশিষ্ট অংশ ফেলে রাখা হয়েছে। কারখানার বাহিরে নেই কোন প্রতিষ্টানের সাইনবোর্ড।
কারখানায় তৈরি কেক ও পাউরুটির গায়ে লাগানো হয়েছে প্রতিষ্টার কাগজের সিল তবে, সেখানে ব্যাচ নাম্বার, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ, ওজন ও খুচরা মূল্যের কথা উল্লেখ করা হয়নি। একটি টেবিলের নিচে কাটুর্নে রাখা হয়েছে ১৫টির মত পি.ই.আর নামের সুপার ফ্লেবারের বোতল। সেগুলো মূলত উৎপাদিত খাবারে সুগন্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বোতলগুলোতে বিএসটিআই এর কোন অনুমোদন সিল নেই মেয়াদ নেই।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারি শরিফ হোসেন বলেন, এক ঘরে এভাবে কারখানা চালানো যায় কিনা তা জানিনা। আমরা কর্মচারি হিসেবে কাজ করি। একই তেল দিয়ে ৩-৪রকমের খাবার তৈরি করা হয়। তেলের কড়াইয়ে সিগারেট কে ফেলে জানিনা। মেয়াদ যে কেন দেয়না সেটা মালিক বলতে পারবেন।
প্রতিষ্ঠানটির মালিকের বাবা হাশেম আলী বলেন, নিয়মতো অনেকই কিছুই আছে সবাই সব নিয়ম মেনে চলেনা। এক ঘরে ৫-৬বছর ধরে বেকারী পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারবোনা।
ফোনে কথা হলে প্রতিষ্টানটির মালিক হাফিজুর রহমান বলেন, বিএসটিআই এর অনুমতির আবেদন করা হয়েছে এখনও অনুমতি পাইনি। আর গত বছর (২০২১) স্যানিটারি ইন্সপেক্টরা এসে কর্মচারিদের ফিটনেস পরিক্ষা করে অনুমতি দিয়েছিল। তবে চলতি বছর ফিটনেস পরিক্ষা করেনি। কিভাবে বিএসটিআই এর অনুমতি ছাড়া এবং খাবারগুলোর গায়ে মেয়াদ উল্লেখছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে একটি ঘরে পন্য উৎপাদন ও বিক্রি করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনাকে সব বলতে পারবোনা। এসব প্রশ্নের উত্তর আপনাকে দিতে রাজি নই। আপনার যা করার করতে পারেন বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিসের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আনিছুর রহমান বলেন, ওই প্রতিষ্টান বিএসটিআই অনুমতি এখনও পায়নি। গত বছর প্রতিষ্টানের কর্মচারিদের ফিটনেস পরিক্ষা করা হয়েছিল। এবার করা হয়নি। আমি কয়েকদিন হলো নতুন যোগদান করেছি জেলায়। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নওগাঁ জেলার সহকারী পরিচালক রুবেল হোসেন জানান, আমি জেলায় নতুন যোগদান করেছি। ওই প্রতিষ্টানটির ব্যাপারে সেসব অভিযোগ উঠেছে সেব্যাপারে আমি দ্রুত পরিদর্শন করে কারখানাটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।