সাপের দংশনে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
আতিকুর রহমান, জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: সোমবার ১৩ই জুন ২০২২ ০৭:২৫ অপরাহ্ন
সাপের দংশনে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রীর মৃত্যু

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলা নতুন কিছু নয়। তাদের চরম গাফলতি ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা গেলেও কোন জবাবদিহীতা নেই। রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী কোন রোগী আসলেই চাপ কমানোর জন্য অহরহ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফরিদপুর ও ঢাকায়। ফলে অনেক হতদরদ্রি রোগী ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মারা যাচ্ছে।


 সর্বশেষ হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাচারীতোলা গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী লিলি খাতুন সাপে কেটে গত শনিবার দিনগত রাতে। রাতেই তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। জরুরী বিভাগ থেকে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। 


রোস্টার ডিউটির তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে ডিউটিতে ছিলেন ডাঃ রাজিব। ব্যবস্থাপত্রে এন্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার কোন নির্দেশনা না থাকায় ডিউটি নার্স এন্টিভেনাম দিতে পারেনি। ফলে মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। 


লিলির ভাই আব্দুল আজিজ অভিযোগ করেন, বার বার এন্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও নার্স ডাক্তারের অনুমতি না থাকায় দেননি। ফলে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই মারা যায় লিলি। চোখের সামনে বোনের মৃত্যু যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়। এ ঘটনায় তার স্বজনরা ক্ষুদ্ধ হন।


 বিষয়টি হাসপাতালের তত্বাবধায়ককে জানানো হলেও কোন কর্ণপাত করেন নি বলে রোগীর স্বজনরা জানান। 


ঘটনার দিন রাতে মেডিসিন ওয়ার্ডে ডিউটিরত একাধিক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিউটি ডাক্তার ব্যবস্থা পত্রে এন্টিভেনাম উল্লেখ করেনি। যে কারণে লিলিকে ইনজেকশন পুশ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ জাকির হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম রিপন তাদের বকাঝকা করেছেন বলেও ওই নার্সরা উল্লেখ করেন। এন্টিভেনাম মজুদ থাকার পরও কেন সাপে কাটা রোগীকে দেওয়া হলো না বিষয়টি জানতে ঘটনার দিন রাতে ডিউটিরত চিকিৎসক ডাঃ রাজিবের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে সোমবার বিকালে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি। ফোন ধরেননি তত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলামও। 


অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে যোগদানকৃত চিকিৎসকরা বেশির ভাগই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ছোড়াকাটা রোগী ছাড়া তাদের ভারি চিকিৎসা দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই বল্লেই চলে। তাছাড়া রাতে একজন মুমুর্ষ রোগীর জন্য কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া দুস্কর বলেও ভুক্তভোগী রোগীরা অভিযোগ করেন।