কুমিল্লার হোমনায় ট্রিপল মার্ডার: খুনি গ্রেফতার, রহস্য উদঘাটন

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি -কুমিল্লা
প্রকাশিত: শনিবার ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৪১ অপরাহ্ন
কুমিল্লার হোমনায় ট্রিপল মার্ডার: খুনি গ্রেফতার, রহস্য উদঘাটন

কুমিল্লার হোমনায় মা, শিশুসহ তিনজনকে হত্যার মামলার মূল আসামী আক্তার হোসেন প্রকাশ সুমনকে (২৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হোমনা থানা পুলিশ তাকে আটক করে। গ্রেফতারকৃত আক্তার হোসেন হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্ধি চরেরগাও গ্রামের হক মিয়ার ছেলে।


মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আক্তার হোসেনের সাথে দীর্ঘদিন ধরেই নিহত মাহমুদা বেগমের পরিবারের সম্পর্ক ছিল। আক্তার ও মাহমুদার মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল, যা প্রায়ই মাহমুদার স্বামী বাড়ীতে না থাকলে তার বাড়িতে যাওয়া-আসার সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। উভয়ের মধ্যে আর্থিক লেনদেনও চলত। সম্প্রতি মাহমুদা অন্য পুরুষের সাথে ফোনে কথা বলার কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আক্তার হোসেনের ক্ষোভ বাড়তে থাকে।


৪ সেপ্টেম্বর রাতে আখের রস ও সিঙ্গারা নিয়ে মাহমুদার বাড়িতে যান আক্তার। রাতে তারা খাবার খেয়ে ও আড্ডা দিয়ে সময় কাটান। সুযোগ বুঝে আক্তার আখের রসের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে মাহমুদা, তার শিশু সন্তান এবং এক প্রতিবেশীকে অচেতন করেন। অচেতন হওয়ার পর সুমন গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তিনজনকেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর তাদের মাথা ও মুখে কাঠের লাঠি দিয়ে আঘাত করে থেঁতলানো হয়। 


প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার হোসেন হত্যার বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আক্তার তার অপরাধ স্বীকার করেছেন এবং হত্যা মামলার তদন্ত এখন চলমান। সুমনের এই বর্বরোচিত কর্মকাণ্ড স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। 


হোমনা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আরও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয়রা মনে করেন, সুমনের গ্রেফতার ঘটনার রহস্য উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং এলাকায় শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার আশা তৈরি হয়েছে। 


এদিকে, হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবার ও স্থানীয় জনগণের মাঝে সমবেদনা প্রকাশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম প্রশংসিত হচ্ছে। পুলিশের কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।