পদ্মায় ফের ভাঙন শুরু, আটকে আছে আধুনিকায়নের কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ২৫শে এপ্রিল ২০২২ ০৭:২৮ অপরাহ্ন
পদ্মায় ফের ভাঙন শুরু, আটকে আছে আধুনিকায়নের কাজ

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বন্যা হওয়ার আগেই শুরু হয়েছে পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙন। ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ছে ভাঙনের তীব্রতা। অথচ নৌবন্দর আধুনিকায়নের বড় কাজ হবে, সেখানে থাকবে নদী শাসনের কাজও, তাই অন্যান্য বছরের মত আপদকালীন কোন কাজও হচ্ছে না এবার ভাঙনরোধে।


এদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌবন্দরের আধুনিকায়ন প্রকল্পের কাজ ফাইল ও বুয়েটের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় আটকে আছে। কাজের অপেক্ষায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে কোন পদক্ষেপ না নিলেও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদীপাড়ের অসংখ্য মানুষের।


রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দেশের ২১ জেলার গুরুত্বপূর্ন নৌ-বন্দর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ। এ নৌপথের দৌলতদিয়া চার কিলোমিটার ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় দুই কিলোমিটার স্থায়ীভাবে আধুনিকায়ন কাজ করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক ৬৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে গত বছরের জানুয়ারি মাসে কাজটি করার দায়ভার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে না পারা ও

দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির কারণে এ কাজের বর্তমান ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ১২শত কোটি টাকা। যে কারণে নকশার বিশ্লেষন করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।


সরেজমিন ঘাট ঘুরে দেখা যায়, লঞ্চঘাট এলাকায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে, এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পদ্মাপারে শত শত মানুষ। ভাঙন ঝুঁকিতে আড়াইশত বসতবাড়ীসহ দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট সহ বহু স্থাপনা।


গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের লঞ্চঘাট এলাকার বাসিন্দা চান্দু মোল্লা বলেন, পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে এবার যতটুকু জমি রয়েছে সেটাও এবার হয়ত নদীগর্ভে চলে যাবে। সরকার শুকনো মৌসুমে ভাঙন রোধে কাজ করলে আমাদের জন্য হয়ত বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটুকু টিকে থাকতো। শুনেছি বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। কিন্তু তার তো কোন আভাস পাচ্ছিনা। এখন আল্লাহর ওপর ভরসা করে আছি, তিনি যা করেন।


ক্ষোভের সাথে এলাকাবাসীর আরো লোকজন বলেন, প্রতি বছরই দেখি মাপঝোপ হয়, কিন্তু কোন কাজ হয় না। শুনেছি গত চার বছর যাবৎ নদী শাসনের স্থায়ী কাজ হবে, তার তো আলামতই দেখছি না।বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা তাদের স্বার্থ হাসিলে পানি বৃদ্ধির সময় ভাঙন শুরু হলে তখন সামান্য জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে, আর সারা বছর তাদের আর কোন খোঁজ খবর থাকে না।


রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটের চার কিলোমিটার এলাকার জন্য ৫১০ কোটি টাকা এবং পাটুরিয়া ঘাটের ২ কিলোমিটার এলাকার জন্য ১৭০ কোটি টাকাসহ ৬৮০ কোটি টাকা পাশ হয়েছে গত বছরের জানুয়ারিতে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি ও নকশার পরিবর্তনের কারণে নতুন করে আবার সাড়ে ১২শত কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। যা বুয়েটে পরীক্ষা নিরিক্ষা চলছে। এ বছরের ভাঙ্গন রোধেও পুনঃরায় জিও ব্যাগ ফেলা হবে, তবে জিওব্যাগ ফেলে স্থায়ী কোন সমাধান হবেনা বলে মনে করছেন তারা।