শতভাগ বিদ্যুতায়নের উপজেলায় গ্রাহক ভোগান্তির শেষ কবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: শনিবার ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:১৯ অপরাহ্ন
শতভাগ বিদ্যুতায়নের উপজেলায় গ্রাহক ভোগান্তির শেষ কবে?

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে বৈদ্যুতিক তার।অনেক জায়গায় খুটির পরিবর্তে মরা বাঁশ বা গাছের সাথে ঝুলানো রয়েছে তার।এ ছাড়া ঘনঘন লোডশেডিং তো আছেই।অযুহাতের যেন শেষ নেই তাদের।তাহলে শতভাগ বিদ্যুতায়নের উপজেলায় গ্রাহক ভোগান্তির শেষ হবে কবে?এমন প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।


ভূঞাপুর উপজেলাকে ২০১৭ সালের ১ মার্চ  শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ খবর শুনেই  উৎসবের আমেজ বিরাজ করে ভূঞাপুরবাসীর মাঝে।দূর্গম চরাঞ্চলে স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক পৌঁছে যাচ্ছে বিদ্যুৎ।সরেজমিনে গিয়ে চরাঞ্চলে বিদ্যাুতের সকল কার্যক্রম দেখা যায়। এতে আশার আলো দেখছেন চরাঞ্চলবাসী। চরাঞ্চলের মানুষ যারা অন্ধকারে থেকেছেন তাদের মাঝে হাসির ঝিলিক দেখা গেছে।


সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ভূঞাপুরে শতভাগ বিদ্যুতায়নের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১২৩.৯০ কোটি টাকা। বরাদ্দে ৮২৬ কিলোমিটার নতুন লাইন নির্মাণের বিষয়টি উল্লেখ্য করা হয়। এ ছাড়াও প্রতিবছর লাইন সংস্কার, খুঁটি, তার, ট্রান্সফরমারসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক মালামালের জন্য বরাদ্দ আসে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ আসে।


তারপরও শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষনার সাড়ে চার বছর অতিক্রম হলেও এর সুবিধা পাচ্ছে না সাধারন মানুষ। খাম্বা বাণিজ্য, লাইন বাণিজ্য, ট্রান্সফরমার বাণিজ্য যেন নিত্তনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। টাকা ছাড়া যেন কোন কিছুই হয়না এ অফিসে। অথচ বিনামূল্যে এসব সুবিধা পাওয়ার কথা গ্রাহকদের। এ ছাড়াও ভুতুড়ে বিল আর লোডশেডিংয়ের বাড়তি বোঝাতো রয়েছেই।


এদিকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলায় এখনো মরা বাঁশ ও গাছের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় তার মাটিতে ছুঁই ছুঁই। বাঁশ দিয়ে কোন রকম টিকিয়ে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে প্রাণহানীর ঘটনা তারপরও টনক নড়ছেনা কর্তৃপক্ষের। দেখেও যেন না দেখার ভান করে চলছে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ রকম চিত্র দেখা গেছে অহরহ।


গোবিন্দাসী গ্রামের সানোয়ার হোসাইন জানান, গোবিন্দাসী স্কুল রোডে লাইনটি জরাজীর্ণ। মাথা ছুঁই ছুঁই। মরা বাঁশ দিয়ে লাইন টিকিয়ে রাখা হয়েছে। দড়ি আর ছেঁড়া কাপড় দিয়ে তার বেঁধে রাখা হয়েছে। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বার বার বিদ্যুৎ অফিসে জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না তারা


চেংটাপাড়া গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন, তার বাড়ির সামনে দিয়ে জরাজীর্ণ একটি বিদ্যুতের লাইন গেছে। এ লাইনে দুটি গরু ও পুকুরের ১৫ হাজার টাকার মাছ মারা যায়। লাইনটি সংস্কারের জন্য ৭ মাস আগে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত লাইনটি সেই অবস্থাতেই রয়ে গেছে। এ রকম অভিযোগ শত শত গ্রাহকের।


এ বিষয়ে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মেহেদী হাসান ভূঁইয়ার অফিসশিয়াল ( ০১৭৫৫৫৮১৩৮৯) নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।