"ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়-প্রশয় না দেওয়ার আহ্বান জানালেন জামায়াত আমির"

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি - কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৪শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৪:১৪ অপরাহ্ন
"ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়-প্রশয় না দেওয়ার আহ্বান জানালেন জামায়াত আমির"

শুক্রবার কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বিশাল কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। প্রায় ২১ বছর পর কুড়িগ্রামে জনসম্মুখে এ ধরনের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলো, যেখানে বিপুল সংখ্যক কর্মী ও সমর্থকের সমাগম হয়। কর্মী সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য খুন-জুলুম চালিয়েছে। তবে বাংলাদেশ একটি দেশপ্রেমিক জাতি, তারা কখনো খুনি হতে পারে না। তিনি আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলেন, এমন কোনো কর্মকাণ্ড করা যাবে না যা জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করবে এবং স্বৈরাচারের পুনরুত্থানের সুযোগ তৈরি করবে।  


ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের নামে ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। দেশের মানুষের ওপর জুলুম চালিয়েছে। এসব অন্যায়ের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। জামায়াত আমির মানবিক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই সংগ্রাম চলবে।  


জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা হবে। চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়-প্রশ্রয় আর বাংলার মাটিতে হবে না।  


জামায়াত আমির তার বক্তব্যে কর্মীদের মানবিক মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে পুনরায় স্বৈরাচার ফিরে আসার সুযোগ পাবে।  


কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামী কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কার্য পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল হালিম, ব্যারিস্টার সালেহীন এবং অধ্যাপক আজিজুর রহমান স্বপন।  


জামায়াত নেতারা তাদের বক্তব্যে সরকারবিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, দমন-নিপীড়নের শিকার হয়েও জামায়াতে ইসলামী জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে।  


কুড়িগ্রাম জেলার এই কর্মী সম্মেলন দীর্ঘদিন পরে জামায়াতের জন্য একটি বড় মঞ্চ তৈরি করে। এতে উপস্থিত কর্মী ও সমর্থকেরা নতুন উদ্দীপনায় উজ্জীবিত হন। সম্মেলনে সরকারের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা এবং মানবিক বাংলাদেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি উঠে আসে।  


জামায়াত নেতাদের মতে, দেশকে ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে মুক্ত করতে হলে জনগণের অধিকার রক্ষা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই কর্মী সম্মেলন জামায়াতের সংগঠনের পুনর্গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে তারা মনে করছেন।