https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

ইসলাম জীবনের সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য

Ziaul Hoque
জিয়াউল হক, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২২, ২২:৩৫

শেয়ার করুনঃ
ইসলাম জীবনের সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য

‘আধুনিক মনস্ক’ কিছু ভাইয়ের মুখে এ প্রশ্নটি প্রায়ই শোনা যায় যে ‘সব জায়গায় ইসলাম টেনে আনেন কেন?’

কয়েক ধরনের মানুষ এ ধরনের প্রশ্ন তোলে। এক. অমুসলিম (ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মে বিশ্বাসী)।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

দুই. নাস্তিক।

 তিন. বংশগতভাবে মুসলিম (ধর্ম-কর্মের ধার ধারে না)। চার. ছদ্মবেশী মুসলিম (সুবিধা বুঝে ইসলাম পালন, নয়তো গোপনে বিরোধিতা)। পাঁচ. ইসলামবিদ্বেষী।

কোনো তর্কে জড়ানোর আগে নিজের পরিচয় এবং অনুসরণীয় মূলনীতি নির্ণয় করা জরুরি। আপনি কে এবং আপনি কী চান—এটি শুরুতে নির্ধারণ করা গেলে যুক্তির আলোকে কথা বলা সহজ।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

সব জায়গায় ইসলাম টেনে আনেন কেন—এ প্রশ্নের সহজ-সরল জবাব হলো, প্রথমে ‘সব জায়গা’ কথাটির পরিধি নির্ধারণ করতে হবে। আপনি কি ‘সব জায়গা’র ভেতরে আছেন? যদি না থাকেন, তাহলে এ প্রশ্ন করার অধিকার আপনার নেই।

আর হ্যাঁ, একজন মুসলমান, যিনি আমৃত্যু আল্লাহর আনুগত্য পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ, তার ‘সব জায়গা’য় ইসলাম থাকবে—এটিই স্বাভাবিক। ইসলামের বিধান কোনো অমুসলিমের জন্য নয়। ইসলামের বিধান কোনো নাস্তিকের জন্য নয়। ইসলামের বিধান কোনো নামধারী মুসলিমের জন্য নয়। ইসলামের বিধান কোনো ছদ্মবেশী কিংবা ইসলামবিদ্বেষীর জন্য নয়। যে ইসলাম মানে না, তার জন্য ইসলাম নয়।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

ইসলামের বিধান শুধু ওই ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহকে রব হিসেবে মেনে নিয়েছে। মুহাম্মদ (সা.)-কে নবী ও রাসুল হিসেবে মেনে নিয়েছে। আমৃত্যু আল্লাহর ইবাদত করার অঙ্গীকার করেছে। শয়নে-স্বপনে, গোপনে-প্রকাশ্যে, আলোকে-আঁধারে, ছোট থেকে বৃহত্—সব কাজে যে আল্লাহকে স্মরণ করে, ইসলাম তার জন্য। যে নিজেকে আল্লাহর কাছে সঁপে দিয়েছে, ইসলাম তার জন্য। যে দুনিয়ার জীবন থেকে পরকালের জীবনকে প্রাধান্য দেয়, ইসলাম তার জন্য।

ইসলাম ওই ব্যক্তির জন্য, যে দ্ব্যর্থহীনভাবে এই ঘোষণা দেয়, ‘বলে দাও, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মরণ বিশ্বজাহানের রব আল্লাহর জন্য। ’ (সুরা: আনআম, আয়াত: ১৬২)

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

তাই প্রত্যেক মুসলমানের করণীয় হলো, যে কাজই সে করুক না কেন, তা কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা। সুতরাং ‘সব জায়গায় ইসলাম টেনে আনেন কেন—এ প্রশ্ন সঠিক নয়।

আসলে ইসলামকে ‘টেনে আনার’ কিছু নেই, বরং ইসলাম সব ক্ষেত্রে স্বমহিমায় উপস্থিত। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্ম। সব কিছুতে ইসলাম—এ কথার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ইসলামে ‘সব কিছু’ আছে। কোরআন বলছে, ‘...আমি মুসলমানদের জন্য সব বিষয়ে ব্যাখ্যাদানকারী, পথনির্দেশক, অনুগ্রহ ও সুসংবাদস্বরূপ তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি। ’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৮৯)

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

ইসলাম আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ অনুগত হওয়া, আনুগত্য করা, আত্মসমর্পণ করা। আল্লাহর কাছে সর্বতোভাবে আত্মসমর্পণকারীকে মুসলিম বা মুসলমান বলা হয়। ইসলামের বাণী সবার জন্য অবারিত হলেও ইসলামের বিধান মুসলমানদের জন্যই প্রযোজ্য। একজন মুসলমানকে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জীবনের সব ক্ষেত্রে ইসলাম মোতাবেক জীবন যাপন করতে হয়।

কেননা মুসলমান মাত্রই এ কথা বিশ্বাস করে, ‘নিঃসন্দেহে (মানুষের) আল্লাহর কাছে একমাত্র (গ্রহণযোগ্য) দ্বিন (জীবনব্যবস্থা) ইসলাম। ’ (সুরা: আলে ইমরান, আয়াত: ১৯)

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

ইসলাম একমাত্র ও সর্বোত্তম জীবনব্যবস্থা। একজন মুসলমান ঘুম থেকে উঠা নিয়ে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক—সব কিছুর ওপর ইসলামের বিধান আরোপিত। ইসলামের আংশিক ধারণ করে, বিশেষ ক্ষেত্রে ইসলাম বর্জন করার সুযোগ ইসলামে নেই। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ’ (সুরা: বাকারা, আয়াত: ২০৮)

মুসলমান হতে হলে এ কথায় বিশ্বাসী হতে হয় আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা, মালিক, প্রতিপালক ও একচ্ছত্র কর্তৃত্বের অধিকারী। সুতরাং তাঁর বান্দাদের জীবনযাত্রার নিয়ম-কানুন নির্ধারণের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাও তাঁর। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তুমি কি জানো না, আসমান ও জমিনের সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহরই?’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১০৭)

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

কোনো মুসলমানের জন্য ইসলামকে কাটছাঁট করা কিংবা সহজায়ন করা সম্ভব নয়। কোরআন বলছে, ‘...তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখো আর কিছু অংশ অস্বীকার করো? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিফল হতে পারে? আর কিয়ামতের দিন তাদের কঠিন আজাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা করো, সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন। ’ (সুরা: বাকারা, আয়াত: ৮৫)

ইসলামে কোনো রিজার্ভেশন বা সংরক্ষণ নেই। এতটুকু আমার, এতটুকু আপনার—এ বিভাজন ইসলামে নেই। এতটুকু দেশের, এতটুকু প্রদেশের—এই পার্থক্য ইসলাম করে না। এতটুকু রাষ্ট্রের, এতটুকু ধর্মের—এই দূরত্ব ইসলাম মেনে নেয় না। এতটুকু রাজনৈতিক সুবিধার, এতটুকু অসুবিধার—এই আপসকামিতা ইসলাম সমর্থন করে না।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

বিশ্বের মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান দুধরচকীর

বিশ্বের মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান দুধরচকীর

ইসরায়েলি তাণ্ডব পুনরায় শুরু হওয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই আগ্রাসনকে অত্যন্ত বড় ধরনের অপরাধ ও বিপর্যয়কর বলে মন্তব্য করেছেন জকিগঞ্জ উপজেলা সচেতন নাগরিক ফোরাম সিলেট এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।  তিনি বলেছেন, বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমান সহ বহিঃবিশ্বে নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে ধারানোর আহবান জানিয়েছেন। বিশেষ করে ফিলিস্তিনকে ভালোবাসা, তাদের

ঈদের নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

ঈদের নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

ঈদের নামাজ ইসলামের অন্যতম বিশেষ ইবাদত, যা দুই রাকাত বিশিষ্ট এবং নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে আদায় করা হয়। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজের মধ্যে সামান্য পার্থক্য থাকলেও উভয় নামাজের মৌলিক নিয়ম এক।   নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা বলার পর হাত বাঁধতে হয় এবং সূরা ফাতিহার পূর্বে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবির বলা হয়। প্রথম রাকাতের তিনটি তাকবিরের পর হাত বাঁধতে হয় এবং

রমজানের শিক্ষা: তাকওয়া ও মানবতার বন্ধন

রমজানের শিক্ষা: তাকওয়া ও মানবতার বন্ধন

রমজানের অন্যতম শিক্ষা তাকওয়া অর্জনের পাশাপাশি পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করা। ২৮তম রোজা পার হয়ে মাহে রমজানের শেষ দশকও সমাপ্তির পথে। আমাদের তারাবিহ, তেলাওয়াত, দোয়া ও ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিসে বলেছেন, অনেকে রোজা রাখলেও কেবল উপোস থাকা ছাড়া তাদের কিছুই অর্জিত হয় না, অনেকে রাত জেগে ইবাদত করলেও নিদ্রাহীনতা

রমজানের শেষ জুমার গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজানের শেষ জুমার গুরুত্ব ও ফজিলত

পবিত্র রমজানের শেষ শুক্রবারকে বলা হয় জুমাতুল বিদা। এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটি রোজাদারদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে মহিমান্বিত এ মাস বিদায়ের পথে। তাই দিনটির যথাযথ মূল্যায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জুমাতুল বিদা উপলক্ষে মুসল্লিরা মসজিদে বিশেষ ইবাদত ও দোয়ায় মশগুল থাকেন।   জুমার দিনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, এটি সপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনে আদম (আ.)-কে

শবে কদরের রাতে রাজধানীর মসজিদে মুসল্লিদের ঢল

শবে কদরের রাতে রাজধানীর মসজিদে মুসল্লিদের ঢল

রাজধানীতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পালিত হচ্ছে পবিত্র শবে কদর। আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের আশায় মুসল্লিরা দলে দলে মসজিদে জড়ো হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, ইস্কাটন, বেইলি রোড ও পুরান ঢাকার বেশ কিছু মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নামে।   বায়তুল মোকাররম মসজিদে দেখা যায়, মুসল্লিরা উত্তর-দক্ষিণ গেট দিয়ে প্রবেশ করছেন।