আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরামর্শ দিলেও, সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি জানিয়েছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিবর্তে উৎপাদন খরচ কমানো এবং দুর্নীতি বন্ধ করে বিদ্যুতে ভর্তুকি কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "আইএমএফ চাইলেও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা উৎপাদন খরচ কমানোর দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি এবং দুর্নীতি রোধ করতে চাই, যাতে ভর্তুকি কমানো সম্ভব হয়।"
এসময় তিনি আরও বলেন, "আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন নিয়ে সরকারের কৌশল নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। আইএমএফের সাথে আমাদের আলোচনা চলছে এবং তারা আমাদের এই কৌশলকে সম্মতি জানিয়েছে।"
এদিকে, চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড়ের বিষয়ে আলোচনা চলছে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদে এটি উপস্থাপন করা হবে এবং বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে ১০ ফেব্রুয়ারি তা ছাড় করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
আইএমএফের মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, "বাংলাদেশের অর্থনীতি আশাব্যঞ্জক অবস্থায় নেই। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না এবং এটি আইএমএফের পূর্বাভাসের চেয়েও অনেক বেশি। তবে, আমরা বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে ইতিবাচক।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে হলে ব্যাংক খাতের সংস্কার এবং অভ্যন্তরীণ আয়ের বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে।" আর্থিক খাতে সংস্কারের পাশাপাশি খেলাপি ঋণ চিহ্নিত করে তা শোধরানোর উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়া, আইএমএফের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা এবং সুশাসন নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আইএমএফের শর্ত পূরণ করে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের নিট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলারে, যা আইএমএফের নির্ধারিত লক্ষ্য ১৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।