প্রকাশ: ৯ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ সবসময়ই মানুষের জন্য মুক্তি ও শান্তির দিকনির্দেশনা দেয়। ইসলাম মানুষের জীবনকে সহজ, সুন্দর ও কল্যাণময় করার জন্য যে শিক্ষা দিয়েছে, তার প্রতিটি দিকেই রয়েছে বাস্তব জীবনের উপযোগী হেদায়াত। মহান আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্য কথা বলো’—এটি শুধু আখেরাতের মুক্তির জন্য নয়, দুনিয়ার জীবনকেও সুন্দর করার জন্য জরুরি। সমাজে সত্যবাদিতা মানুষের প্রতি আস্থা বাড়ায় এবং বিভক্তি কমায়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সত্যবাদিতা ও আমানতের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মক্কার কুরাইশরা তাঁকে ‘আল-আমিন’ নামে ডাকত কারণ তিনি কখনো কাউকে ঠকাননি। আজকের বিশ্বে যেখানে মিথ্যা, প্রতারণা ও স্বার্থপরতা বেড়েছে, সেখানে ইসলাম আমাদের শেখায়—সত্য ও ন্যায়ের পথে চলাই উত্তম পথ।
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের সম্পদ, সম্মান ও জীবন রক্ষা করা ফরজ। রাসুল (সা.) বলেছেন, একজন মুসলমানের রক্ত, সম্পদ ও সম্মান অপর মুসলমানের কাছে হারাম। এ হাদিস শুধু মুসলিম সমাজেই নয়, মানবতার জন্যও একটি বিশ্বজনীন নীতি। যদি সমাজে সবাই এই নীতি মেনে চলে, তবে অপরাধ ও অবিচার অনেকাংশে কমে যাবে।
কোরআন ও হাদিসে সৎকর্ম করার জন্য প্রতিনিয়ত উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা ন্যায়পরায়ণ, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। ন্যায়পরায়ণতা শুধু আদালতে নয়, পরিবার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামাজিক সম্পর্কের প্রতিটি ক্ষেত্রে পালন করতে হবে।
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রসারে মিথ্যা খবর ও গুজব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ইসলাম এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছে এবং সত্য যাচাই ছাড়া কিছু প্রচার না করার নির্দেশ দিয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, কোনো সংবাদ পেলে তা যাচাই করো, যাতে অজ্ঞতাবশত কারো ক্ষতি না করো।
এছাড়া ইসলাম দান-সদকা ও সমাজসেবাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। দান শুধু গরিবদের আর্থিক সহায়তা নয়, বরং সমাজে ভালোবাসা ও সহমর্মিতা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি মাধ্যম। রাসুল (সা.) বলেছেন, হাসি-খুশি মুখে ভাইয়ের সাথে কথা বলাও সদকা।
আজকের দিনে মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রয়োজন ইসলামের এই মৌলিক দিকগুলোকে জীবনে প্রয়োগ করা। সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, দানশীলতা ও পরস্পরের প্রতি সম্মান দেখালে সমাজে শান্তি ফিরে আসবে।সুতরাং আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশ মেনে জীবন পরিচালনা করাই প্রতিটি মুসলমানের জন্য একমাত্র সফলতার পথ। এই পথে চললে দুনিয়াতেও মর্যাদা ও শান্তি মিলবে, আখেরাতেও মুক্তি লাভ করা সম্ভব হবে।