প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ৯:৩৬
ইসলামে দোয়া বা প্রার্থনা আল্লাহর সাথে বান্দার সবচেয়ে সুন্দর সংলাপ। কুরআনে আল্লাহ বলেন, “আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” (সূরা গাফির: ৬০) দোয়া কেবল চাওয়ার নাম নয়, বরং এটি বান্দার অন্তরের বিনয়, আশা এবং ঈমানের প্রকাশ। দোয়ার মাধ্যমে একজন মুমিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য কামনা করে, তা দুনিয়ার সমস্যা হোক বা আখেরাতের কল্যাণ।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “দোয়া ইবাদতের মূল।” (তিরমিজি) অর্থাৎ ইবাদতের আসল চেতনাই হচ্ছে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া এবং তাঁর ওপর পূর্ণ নির্ভরতা রাখা। দোয়া একজন মুসলিমের জীবনে মানসিক শক্তি যোগায় এবং তাকে ধৈর্যের সাথে বিপদ মোকাবিলার সাহস দেয়।
দোয়া করার সময় আন্তরিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হৃদয় যেন আল্লাহর দিকে সম্পূর্ণ মনোযোগী থাকে এবং দোয়ার শব্দ ও অর্থ যেন অন্তরের সাথে মিশে যায়। অহংকার বা আত্মতুষ্টি নিয়ে দোয়া করলে তা কবুল হয় না। বরং বিনয় ও ভরসার সাথে দোয়া করতে হবে।
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর দোয়া করার অভ্যাস একজন মুসলিমের জীবনকে সুন্দর করে তোলে। জীবনের বড় কোনো সিদ্ধান্ত, নতুন কাজের শুরু বা বিপদের সময়ও দোয়া করা সুন্নত। এছাড়া রাতে তাহাজ্জুদ নামাজের পর দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্য।
দোয়ার সময় হালাল রুজি ও পবিত্র জীবনযাপন অত্যন্ত জরুরি। হাদিসে এসেছে, হারাম উপার্জনে জীবনযাপন করলে দোয়া কবুল হয় না। তাই দোয়া কবুলের জন্য জীবনকে শুদ্ধ রাখা ইমানের অংশ।
দোয়ার ফলাফল সব সময় তাৎক্ষণিকভাবে নাও আসতে পারে। কখনও আল্লাহ দোয়ার বিনিময়ে বড় কোনো বিপদ দূর করে দেন, কখনও তা আখেরাতের জন্য সঞ্চয় করে রাখেন, আর কখনও বান্দার জন্য আরও উত্তম কিছু দিয়ে থাকেন।
একজন মুসলিমের উচিত দোয়াকে জীবনের অভ্যাসে পরিণত করা। ঘুম থেকে ওঠা, খাবারের আগে-পরে, ভ্রমণে বের হওয়ার সময়, এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ছোট-বড় সব প্রয়োজনেই আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া।
দোয়া শুধু চাওয়া নয়, বরং আল্লাহর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যম। যে বান্দা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে দোয়াকে সঙ্গী করে, সে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয় না এবং দুনিয়া ও আখেরাত—দুই জীবনেই শান্তি লাভ করে।