প্রবল ঘুর্ণিঝড় দানার প্রভাবে পটুয়াখালীতে গুঁড়ি গুঁড়ি থেকে মাঝারী বৃষ্টিপাতে ব্যাহত জনজীবন। সকাল থেকে আকাশে রয়েছে মেঘের ঘনঘাটা। থেমে থেম মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে সেই সাথে বইছে দমকা হাওয়া। রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা, বিপাকে পড়েছে দিনমজুর শ্রমজীবী মানুষেরা। নদ-নদীর পানির উচ্চতাও কিছুটা বাড়লেও তা বিপদসীমার নীচে রয়েছে। এদিকে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। বড় বড় ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ছে। সকল মাছধরা ট্রলার সমূহকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্নিঝড় জনজীবন নিরাপত্তায় ৮২৯ টি সাইক্লোন সেল্টার সহ সিপিপি সেচ্ছাসেবক ও মেডিকেল টিম প্রস্তুত রেখেছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় দানা ও পূর্ণিমার প্রভাবে পটুয়াখালী পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থান সহ জেলার বিভিন্ন নিন্মাঞ্চলে পানি ওঠায় জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়েছে। রাস্তাঘাটে জন উপস্থিতি অনেকটাই কম দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিত্য দিনের তুলনায় বেচা বিক্রি নিন্মগামী। রিক্সা চালক থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া দিনমজুরদের কাজ অনেকটাই শিথিল অবস্থায় রয়েছে। এতে অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলার ১০ কিমি অরক্ষিত ভেড়িবাঁধ ও শীতকালীন সবজিতে কিছুটা প্রভাব পরতে পারে। এছাড়া তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জেলার বিভিন্ন নদনদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে কম রয়েছে। যার জন্য জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা খুব একটা নেই। তবে জেলার ১০ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকায় যদি জলোচ্ছ্বাসয় হয় তবে কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আর ওই ১০ কিলোমিটার অরক্ষিত ভেড়িবাঁধ অস্থায়ীভাবে কাজ করলে কোন লাভ হবে না। এই বেড়িবাঁধ গুলো স্থায়ীভাবে মেরামত করতে হবে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন।
এদিকে পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় বর্তমানে মাঠে আমন ধান রয়েছে ১ লক্ষ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে ও শীতকালীন শাক সবজি রয়েছে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে। যদি দুই এক দিন টানা বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা হয় তবে বিভিন্ন জায়গায় আমান ধানের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়াও মাঠে যে শীতকালীন শাক সবজি রয়েছে তার ক্ষতি হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে তবে জেলায় কৃষি খাতে কি পরিমান আর্থিক ক্ষতি হতে পারে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে তিনি কিছু বলতে পারেননি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর পটুয়াখালীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার জাহান জানান, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে প্রায় ৯০ কিঃমিঃ বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তবে এর প্রভাব সুন্দরবন অঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও টানা বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যেটি নিম্নচাপের পরে একটি স্বাভাবিক ঘটনা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।