প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২০, ২১:১১
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ৭৬তম ‘জন্মদিন’ আগামী ১৫ আগস্ট (শনিবার)। তবে গত বছরের মতো এবারও ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কোনো কর্মসূচি পালন করবে না বিএনপি। মূলত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে খালেদার জন্মদিন পালনের বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে ১৫ আগস্টের বদলে ১৬ আগস্ট জন্মদিনের কর্মসূচি পালন শুরু করে বিএনপি। এবারও গত বছরের মতোই একদিন পরে হতে পারে খালেদার জন্মদিনের কর্মসূচি।
এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবীর খান বলেন, ‘গত বছর ম্যাডামের জন্মদিন উপলক্ষে তার রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনা করে সারাদেশে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া হয়েছিল। এই বছর এখন পর্যন্ত আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি।’
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খালেদা জিয়ার ৭০তম জন্মদিনে সিদ্ধান্ত হয়, ১৫ আগস্ট তিনি আর জন্মদিনের কেক কাটবেন না। কেক কাটার পরিবর্তে মিলাদ মাহফিল এবং তার স্বামী দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধি জিয়ারতের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট খালেদার ৭১তম জন্মদিনে কেক না কেটে সকালে জিয়াউর রহমানের সমাধি জিয়ারত ও মিলাদ মাহফিল করা হয়। ২০১৮ সাল পর্যন্ত সেই ধারা অব্যাহত ছিল। গত ২০১৯ সালে ৭৫তম জন্মদিনে ১৫ আগস্টের পরিবর্তে ১৬ আগস্ট জিয়ার সমাধি জিয়ারত ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই বছরও গত বছরের মতো কর্মসূচি পালন হতে পারে।
তবে দলীয় চেয়ারপারসনের জন্মদিন কিভাবে পালন হবে তা নিয়ে এখনো দলীয় ফোরামে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান ওই বিএনপি নেতারা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়ার ৭০তম জন্মদিন থেকে সিদ্ধান্ত হয়, তার জন্মদিনে কেক কাটা হবে না। এরপর থেকে তার জন্মদিনে কেক কাটা হয়নি। কেক কাটার পরিবর্তে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধি জিয়ারত ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হতো। গত বছর তো সেটাও একদিন পিছিয়ে ১৬ আগস্ট করা হয়েছিল। এই বছর সেই রকম কিছু হতে পারে। আর ১৫ আগস্ট তো শোক দিবস।’
১৯৪৫ সালে খালেদা জিয়ার জন্ম হলেও তার জন্মতারিখ নিয়ে বিতর্ক আছে। খালেদা জিয়ার বাবা এস্কান্দার মজুমদারের বাড়ি ফেনী হলেও তিনি দিনাজপুরে বসবাস করতেন। খালেদা জিয়ার জন্মও সেখানে। তার মায়ের নাম তৈয়বা মজুমদার। ১৯৬০ সালের আগস্ট মাসে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, বাংলাপিডিয়াসহ খালেদা জিয়ার জীবনীর ওপর রচিত কয়েকটি বইয়ে তার জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট উল্লেখ আছে। তবে সমালোচকদের দাবি, একেক জায়গায় খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে একেক রকমের তথ্য আছে। তার পাসপোর্টে এক ধরনের তথ্য, আবার পরীক্ষার সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য জরুরি ডকুমেন্টে তথ্যের ভিন্নতা পাওয়া গেছে।
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয় সরকার। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না, এমন শর্তে সাজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর সেদিন গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় ওঠেন খালেদা জিয়া। এখন সেখানেই আছেন তিনি।