শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সৈয়দ আশরাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ৫ই জানুয়ারী ২০১৯ ০৯:৪৮ অপরাহ্ন
শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সৈয়দ আশরাফ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ রাজধানীর ২১, বেইলি রোডে তার সরকারি বাসভবনে নেওয়া হয়। সেখান থেকে মরদেহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের হিমকক্ষে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শনিবার (৫ জানুয়ারি) জধানীর ২১, বেইলি রোডে তার সরকারি বাসভবন থেকে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে মরদেহ নিয়ে বেরিয়ে যায় লাশবাহী গাড়ি। এসময় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো দেখতে আত্মীয়-স্বজন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও সাধারণ মানুষ বেইলি রোডে অবস্থান নেন।  শ্রদ্ধা জানানোর জন্য অনেকের হাতে ছিল ফুল। এর আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ গ্রহণ করতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের একাধিক নেতৃবৃন্দ। এদের মধ্যে রয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ‌ যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লা সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু পঙ্কজ দেবনাথ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর হেলিকপ্টারে মরদেহ কিশোরগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে এবং দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মরহুমের তৃতীয় জানাজা দুপুর ২টায় ময়মনসিংহের আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আছর বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন আদর্শবান-ত্যাগী-নিবেদিতপ্রাণ ও সর্বজনস্বীকৃত এই নেতা। ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই সৈয়দ আশরাফ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে তিনি গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদ থেকে ছুটি নেন। এ অবস্থাতেই একাদশ সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হন সৈয়দ আশরাফ। দেশে ফিরে শপথ নিতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েছিলেন মুজিবনগর অস্থায়ী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। কিন্তু তা আর হলো না। অগণিত নেতাকর্মী আর শুভানুধ্যায়ীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন সবার প্রিয়ভাজন আশরাফ।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এ দিকে সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর খবরের সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে পড়ে। নিমিষেই ফেসবুক পোস্টে ভাইরাল হতে থাকে সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর খবর। বৃহস্পতিবার রাতেই শোক জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা। অন্যদিকে তার দল আওয়ামী লীগ ছাড়াও দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানান।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব