রাজনৈতিক স্বার্থে জরুরি অবস্থা আর নয়, লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন

রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১২তম দিনে এই বিষয়ে আলোচনা হয়। সংলাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলো সংবিধানের ১৪১ (ক) অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাবের ওপর একমত পোষণ করে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রস্তাব করে, রাষ্ট্রের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির কাছে সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হলে তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন, তবে সেটি অনধিক ৯০ দিনের জন্য এবং তার পূর্বেই মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন থাকতে হবে।

বর্তমান সংবিধানে জরুরি অবস্থার মেয়াদ ১২০ দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্বাক্ষরের ভিত্তিতে ঘোষণার বিধান রয়েছে। এই বিধানের পরিবর্তে নতুন খসড়ায় প্রধানমন্ত্রীর সইয়ের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার সম্মতি এবং বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা বা অনুপস্থিত থাকলে উপনেতার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে।

এই প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছুটা মতভেদও দেখা যায়। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মন্ত্রিসভার পরিবর্তে সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব দেন। খেলাফত মজলিশের আহমদ আবদুল কাদের বিরোধীদলের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে চান। জামায়াতে ইসলামীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ উভয়েই মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতার উপস্থিতি জরুরি বলে মত দেন। ইসলামী আন্দোলনের আশরাফ আলী আকন উপনেতার উপস্থিতির বিষয়টি উত্থাপন করেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার জানান, বিরোধীদলীয় উপনেতাও মন্ত্রী পদমর্যাদার অধিকারী, তাই তার উপস্থিতিও যথার্থ।

সবশেষে সিদ্ধান্ত হয়, জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর সইয়ের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন লাগবে এবং এই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা বা উপনেতা উপস্থিত থাকতে হবে।