বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা এবং বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে নতুন একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। রোববার (৩০ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য দেন।
মিন্টু জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসাসংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী নেওয়া হবে। দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি ও লিভার জটিলতাসহ নানা অসুস্থতায় ভুগছেন ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। শুক্রবার গভীর রাতে তাঁর অবস্থা অবনতি হলে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, শ্বাস–প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। শরীর কার্যকর রয়েছে, হাত–পা নাড়াচাড়া করতে পারছেন এবং দু-একটি কথা বলেছেন। তবে হৃৎপিণ্ডে জটিলতা ও অগ্ন্যাশয়ের তীব্র প্রদাহ পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করছে। বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, খালেদা জিয়া স্থিতিশীল থাকলেও এখনও শঙ্কামুক্ত নন।
তাঁকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে পরিবার ও দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ভিসা, সম্ভাব্য কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা এবং এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা—সবই চলমান। তিনি বলেন, “যদি মেডিকেল বোর্ড উপযুক্ত মনে করে এবং তিনি বিমানে যাতায়াতের অবস্থায় থাকেন, তাহলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস, লন্ডন ক্লিনিকসহ বিদেশি চিকিৎসকরাও অনলাইনে পরামর্শ দিচ্ছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামীকাল সোমবার চীনের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল ঢাকায় আসতে পারে। তারা খালেদা জিয়ার অবস্থা মূল্যায়ন করবেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁকে লন্ডন বা সিঙ্গাপুর নেওয়ার আগ্রহ আছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কুয়েত, সিঙ্গাপুর ও কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
এদিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খোঁজ নিতে হাসপাতালে ভিড় করায় চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে বলে বিএনপি অনুরোধ জানিয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, “দয়া করে কেউ হাসপাতালে ভিড় করবেন না। সময়মতো সবাইকে জানানো হবে।” সারাদেশে বিএনপি ও বিভিন্ন সংগঠন তাঁর সুস্থতা কামনায় দোয়া মিলাদ আয়োজন করেছে।