ইরি ধান আবাদে আশাশুনির কৃষকদের ব্যস্ত সময়

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: শুক্রবার ৩১শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৩:৪৭ অপরাহ্ন
ইরি ধান আবাদে আশাশুনির কৃষকদের ব্যস্ত সময়

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় কৃষকরা ইরি ধান আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমন ধানের ভালো ফলন ও ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকরা এবার ইরি আবাদের প্রতি বেশি উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। জমি প্রস্তুত, সেচ, সার প্রয়োগ ও চারা রোপণের কাজে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।  


সকালের শীত উপেক্ষা করে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। কেউ জমিতে হালচাষ করছেন, কেউ বা আইলে কোদাল চালাচ্ছেন, আবার কেউ সেচের জন্য ড্রেন কেটে নিচ্ছেন। অনেকে শ্যালো মেশিন বসানোর জন্য ঘর তৈরি করছেন, কেউ বা প্রস্তুতকৃত জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। চাষিরা জানিয়েছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চারা ভালো হওয়ায় আবাদ আরও সহজ হয়েছে।  


কাদাকাটি ইউনিয়নের কৃষক সুকুমার জানান, গত কয়েক বছর ধানের ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। তবে এবার আমন মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় ইরি চাষে আগ্রহ বেড়েছে। বুধহাটা গ্রামের নিলু দাস বলেন, অন্যান্য বছর বীজতলায় পচন ধরতো, কিন্তু এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় চারার মান ভালো হয়েছে।  


শ্বেতপুর এলাকার কৃষক গোলাম মস্তোফা বলেন, ইরি ধান আবাদে শ্রম ও খরচ দুটোই বেশি। চারা লাগানোর পর কয়েকদিন পরপর সেচ দিতে হয়। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ভালো লাভের আশা করছি।  


এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া কিছুটা প্রতিকূল থাকলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহায়তা করে যাচ্ছেন।  


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম ইনামুল ইসলাম জানান, ইরি ধান আবাদে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যাতে কৃষকরা ভালো ফলন পেতে পারেন।  


কৃষকদের মতে, ইরি ধান আবাদ লাভজনক হলেও শ্রম ও খরচ বেশি হওয়ায় অনেকেই শঙ্কিত থাকেন। তবে সরকারি সহযোগিতা ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় তারা লাভবান হতে পারেন। কৃষকরা আশাবাদী, এবারের ইরি মৌসুমেও তারা আমনের মতো ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাবেন।