দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারা এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ এ বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা আয়োজন করে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউটের সামনে রাস্তায় খোলা ট্রাকের ওপর তৈরি মঞ্চে শোভাযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শুরু হয়। এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্নয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
বক্তরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। দেশের-বিদেশে নানাভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আজকের দিনে আমাদের শপথ সমস্ত অগণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান ও এ এইচ এম খাইরুজ্জমান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ড. দীপু মনি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, এডভোকেট আফজাল হোসেন ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ কামাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে স্বাধীণতা অর্জন হয়েছিল, তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই দেশের স্বাধীনতাকে শেষ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন পথ পরিক্রমরা মধ্য দিয়ে তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বাধীনতা উদযাপন করতে পারছি। বঙ্গবন্ধু এই স্বাধীনতার জন্য ২৩ বছরের মধ্যে সাড়ে ১৩ বছর কারা নির্যাতন ভোগ করেছিলেন। দুই দুইবার ফাঁসির মঞ্চের আসামি হয়ে বাংলার মানুষের জীবনের জয়গান গেয়ে মুক্তি-পাগল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
তিনি বলেন, আজকে স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বঙ্গবন্ধু যখন এই দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন তাকে স্বপরিবারের হত্যার মধ্য দিয়ে নব্যপাকিস্তান সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। যখন দল ভাঙার রাজনীতি এই দেশে জিয়াউর রহমান শুরু করে, এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হত্যা করে, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে; সেই মুহূর্তে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশের এসে হাল ধরেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করছি, তখন বারবার তার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মতোই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে তিনি এগিয়ে গিয়েছেন। ১৯ বার মৃত্যুপথ যাত্রী শেখ হাসিনা জীবিত আছে বলেই বঙ্গবন্ধুর সেই অসমাপ্ত কাজ তিনি যেটা চেয়েছিলেন বাঙালি জাতির পৃথিবীর বুকে একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আজ তারই নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পৃথিবীর বুকে আত্মপ্রকাশ করেছে একটি সমৃদ্ধশালী জাতি হিসেবে, উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা বলেন, ষড়যন্ত্র থেমে নেই এখনও ষড়যন্ত্র চলছে, এখনো সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টির মাধ্যমে বাঙালির ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এখনও গণতন্ত্রের নামে অগণতান্ত্রিক শক্তি গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করাবরা চেষ্টা করছে। আজকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল ষড়যন্ত্রকে পদদলিত করে যেভাবে তিনি এদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেভাবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে। অগণতান্ত্রিক ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রাজণৈতিকভাবে মোকাবিলা করাই আজ আমাদের শপথ।
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করে দেশ এগিয়ে গেছে এবং এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবোই।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পৃথিবীর কোনো শক্তি ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি থামাতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, গত ৫০ বছরের পথ চলায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির বিরুদ্ধে, বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপরে ফেলে বাংলাদেশ আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি, সেই স্বপ্নের পথে দূর্বার গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ আজ গর্বিত জাতি।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে, ৭২ সালে যারা সংশয়ে ছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসাবে টিকে থাকতে পারবে কি না? বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশ হবে কি না? তারা আজকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে বাংলাদেশের দিকে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায় নি, সেই অপশক্তি আজকেও দেশে-বিদেশে সক্রিয় রয়েছে। আমরা সমস্ত অপশক্তিকে পদদলিত করে, সমস্ত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে দেব। আজকের দিনের এটাই প্রত্যয়, সমস্ত অপশক্তি নিপাত যাক, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির চূড়ান্ত পতন হোক।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।