বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যালেক্স সোরোসের সাক্ষাৎ নিয়ে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের মিথ্যা প্রপাগান্ডার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি, ভারতের সাপ্তাহিক পত্রিকা "দ্য অর্গানাইজার" এক প্রতিবেদনে এসব অভিযোগ তুলেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই তথ্যকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর ফ্যাক্ট চেকের দাবি, ভারতের কিছু গণমাধ্যমের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা এবং শেখ হাসিনার সরকারকে আরও বেশি স্বৈরাচারী চরিত্রে চিত্রিত করা। এই প্রচারণার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ফ্যাক্ট চেক রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, "দ্য অর্গানাইজার" পত্রিকায় যে সর্বশেষ মিথ্যা তথ্য প্রচারিত হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভুল উদ্দেশ্যে রচিত। এতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং অ্যালেক্স সোরোসের সাক্ষাৎকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অসত্য।
এছাড়া, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্দেশ্যেই এই ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাদের লক্ষ্য হলো, সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা এবং দেশের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হানা।
তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং ঢাকায় তাদের দূতাবাস ভালোভাবে জানে যে, অধ্যাপক ইউনূস এমনকি সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও সাক্ষাৎ করেন এবং বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। তাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ, এমনকি সরকার বিরোধী বিভিন্ন ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীও রয়েছে।
এটি পরিষ্কার যে, ভারতীয় গণমাধ্যমের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারের জন্য এটি একটি কল্পনাপ্রসূত গল্প, যা কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ধরনের মিথ্যা প্রচারণা বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং সরকারের প্রতি জনগণের আস্থাকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে না। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের ওপর এই ধরনের বিদেশী হস্তক্ষেপকে তারা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা দৃঢ়ভাবে দাবি করেছেন, দেশের উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি অবিচল থাকবে। ভারতীয় গণমাধ্যমের এই মিথ্যা সংবাদকে তারা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
বাংলাদেশের জনগণ এই ধরনের প্রচারণার বিপরীতে আরও একতাবদ্ধ এবং সচেতন থাকতে হবে। তারা মনে করেন, বিদেশী গণমাধ্যমের এই ধরনের অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের দৃঢ়তা সত্ত্বেও ভারতের এই ধরনের প্রচারণা যে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তা স্পষ্ট। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোনও বিদেশী হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না এবং এই ধরনের প্রচারণাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে।
সর্বশেষে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের অগ্রগতির পথ পরিস্কার রাখার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।