গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৮ অপরাহ্ন
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন তারেক রহমান


বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নীতিগুলো প্রচার ও সমুন্নত রাখার কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রই এমন এক সর্বজনীন মূল্যবোধ, যা মানুষের স্বাধীন ভাব প্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রদান করে। 


তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেন, "আমরা একটি নিরাপদ, প্রগতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ, যা শুধু বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যেই নয়, বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক বিকাশেও ভূমিকা রাখবে।"


গণতন্ত্রের শক্তির ওপর আলোকপাত করে তারেক রহমান বলেন, জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। এই দিবসটি গণতন্ত্র সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং এর অন্তর্নিহিত শক্তি উপলব্ধি করার প্রেরণা জোগায়। তিনি বলেন, "যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আত্মদানকারী শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।"


তারেক রহমান আরও বলেন, "শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শনের মূলে ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র, যা সাম্য, মানবিক মর্যাদা, ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। বেগম খালেদা জিয়া এই চিন্তা ও দর্শনকে আপসহীন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অগ্রসর করেছেন। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে স্বৈরাচারী শাসকরা ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু জনগণের ইচ্ছা ও গণআকাঙ্ক্ষার কারণে তাদের সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি।"


বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তারেক রহমান বলেন, "গত ১৬-১৭ বছরে কোটি কোটি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়নি। ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন পরিচালিত হয়েছে, এবং বহু মানুষ অর্থবহ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। দেশের কয়েক প্রজন্ম গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ ছাড়াই বেড়ে উঠেছে।"


তিনি আরও উল্লেখ করেন, "অপশাসনের ফলে দেশের মানুষ সংকুচিত স্বাধীনতা ও সৃজনশীলতার অভাবে ভুগছে। মানবিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত নষ্ট করা হয়েছে। সবল ও শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের আরও অনেক দূর এগোতে হবে। কারণ এখনও বিশ্বে অনেক দেশেই গণতন্ত্র দুর্বল অবস্থায় রয়েছে।"


এ বছরের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘গভর্নেন্স ও সিটিজেন এনগেজমেন্টের জন্য এআই নেভিগেট করা’ নিয়ে তারেক রহমান বলেন, এই থিম অত্যন্ত সময়োপযোগী। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষতা কেবল আমাদের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে।


তারেক রহমান বলেন, "আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের রাষ্ট্রের মেরামতের ভিত্তি হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন; বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের মূলনীতির প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োগ। ইনশাআল্লাহ, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধি, স্বাধীনতা ও ন্যায়পরায়ণতা নিশ্চিত হবে।" 


তারেক রহমানের এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, বিএনপি ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রত্যাশা করছে, যেখানে সুশাসন, স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ অব্যাহত থাকবে।