প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৪৪
ঢাকা, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪: গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর দলটি গভীর নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে। দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা এখন নিজেদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা আত্মগোপনে চলে গেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে দলের অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন, ফলে আওয়ামী লীগে নেতৃত্বশূন্যতা এবং সংগঠন পরিচালনায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।
এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরিবর্তনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। গুঞ্জনে বলা হচ্ছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে দলের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতা এসব গুঞ্জনকে সম্পূর্ণ অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন।
আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, "এসব গুঞ্জন সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটি পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়নি। এটি একটি অপপ্রচার, যা দলের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।"
তিনি আরও জানান, বিএনপি-জামায়াত জোটই এই গুজব ছড়ানোর পেছনে রয়েছে, যা তারা অতীতেও করেছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে বিভাজন তৈরি করা এবং দলকে দুর্বল করা। তবে তৃণমূলের কর্মীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি স্বীকার করেন যে, দলের ভেতরে কিছু ভুল হয়েছে এবং সেগুলো শুধরে দলকে পুনরায় সক্রিয় করার বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলীয় শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তাদের অভিযোগ, বর্তমান সংকটের সময় শীর্ষ নেতৃত্বের অনুপস্থিতি দলের ভিত্তিকে দুর্বল করে দিয়েছে। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, "আমরা নেতৃত্বশূন্যতার মধ্যে আছি। নেতারা আত্মগোপনে রয়েছেন, যা দলের মনোবলকে ভেঙে দিচ্ছে। আমরা দ্রুত সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ চাই।"
শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি এবং দলের ভেতরে বিভাজনের কারণে আওয়ামী লীগ বর্তমানে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। দলের নেতারা এখন দলকে পুনর্গঠনের এবং তৃণমূলের আস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় আছেন। তবে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে গুঞ্জন বা বাস্তবতা, যাই হোক না কেন, আওয়ামী লীগের জন্য এটি একটি সংকটময় সময়।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানান, শিগগিরই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডেকে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে এবং দলকে পুনরায় সংগঠিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দলীয় ভাঙন রোধে এবং তৃণমূলের আস্থা পুনরুদ্ধারে তারা আন্তরিকভাবে কাজ করছেন বলে উল্লেখ করেন।