ভারতে বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিল সংশোধন বাতিল এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশ সরকারকে সক্রিয় ভূমিকায় আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটি মনে করছে, এই পরিস্থিতিতে নিরব থাকা বাংলাদেশের জন্য শুধু অমানবিক নয়, বরং প্রতিবেশী হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণও।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, ভারতে হিন্দুত্ববাদী সরকার ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে মুসলিম নিধনের নতুন পথ তৈরি করছে। তিনি বলেন, ওয়াক্ফ প্রথা ভারতবর্ষের দীর্ঘ ঐতিহ্যের অংশ, যা কেবল ধর্মীয় নয়, বরং সামাজিক উন্নয়নেরও প্রধান ভিত্তি ছিল।
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, ওয়াক্ফ সম্পত্তির মাধ্যমে উপমহাদেশে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ ও মানবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। অথচ বিজেপি সরকার ওই সম্পত্তিকে তাদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বলি বানিয়ে মুসলিম সমাজকে আরও প্রান্তিক করার নীতি গ্রহণ করেছে।
মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, শুধু ভারতীয় মুসলিমদের নয়, গোটা উপমহাদেশের ধর্মীয় সহনশীলতার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের উচিত দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক চ্যানেলে কঠোর বার্তা দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সংকটে পড়লে ভারত সহযোগিতা করেছিল। আজ ভারতীয় সংখ্যালঘুরা যখন নির্যাতনের শিকার, তখন তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। শুধু বিবৃতি নয়, বরং আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বিবৃতিতে তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, ভারতে মুসলিমদের ওপর নিপীড়নের বিষয়টি জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সামনে তুলে ধরার জন্য যথাযথ উদ্যোগ নিতে। সেই সঙ্গে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখারও পরামর্শ দেন।
ইসলামী আন্দোলন মনে করে, প্রতিবেশী দেশের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া শুধু রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং মানবিক ও নৈতিক অঙ্গীকারের অংশ।