সদর উপজেলার রুহিয়ায় বিএনপি ও আ’লীগের সংঘর্ষের ঘটনায় আ’লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল রোববার আ’লীগ-বিএনপি’র দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুরে জেলা আ’লীগের আয়োজনে সংগঠনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায় লিখিত বক্তব্যে বলেন, রুহিয়ায় হামলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। তারা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের অন্তরালে আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন সহ আ’লীগ নেতা কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। রুহিয়া বিএনপির সমাবেশ হলেও তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অন্যান্য জেলা থেকে চিিহ্নত সন্ত্রাসীদের একত্রিত করে দাঙ্গা-হাঙ্গামা শুরু করে। রুহিয়া থানা আ’লীগের সভাপতি পার্থ সারথি সেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর উপস্থিতিতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ক্ষতিসাধন করে। সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে গেলে রুহিয়া থানা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি, রুহিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক দিদারুল আলী, থানা ছাত্রলীগের নেতা সাইমুন সোহাগ, হায়দার আলী, রাশেদুল ইসলাম কাবুলসহ অনেকে গুরুতর আহত হন।
এছাড়াও বিএনপি সন্ত্রাসীরা রুহিয়া চৌরাস্তায় আ’লীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে অবৈধ অগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রসহ হামলা চালিয়ে থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক বাসারুল ইসলাম সোহেল, থানা ছাত্রলীগের সদস্য মাহিন ও সোহেল রানা গুলিবিদ্ধ হন। তারা কয়েকটি মটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনাকে দু:খজনক, নেক্কারজনক উল্লেখ করে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে সরে এসে দেশের শান্তি-শৃংখলা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে রাজনীতি করার জন্য বিএনপির প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা আ’লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মুহ: সাদেক কুরাইশী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, সহ সভাপতি মাহাবুবুর রহমান খোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মোস্তাক আলম টুলু, আসম গোলাম ফারুক রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ জুলফিকার আলী ভুট্টো, সন্তোষ কুমার আগারওয়ালা, দপ্তর সম্পাদক এ্যাড. নাসির হোসেন, প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাড. অরুনাংশু দত্ত টিটো, সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার, রুহিয়া থানা আ’লীগের সভাপতি পার্থ সারথি সেনসহ আ’লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
অপরদিকে বিকেলে জেলা বিএনপির আয়োজনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান বলেন, পূর্বনির্ধারিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গুম, খুন, হত্যাসহ সার, জ্বালানী তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির প্রতিবাদে রুহিয়ায় বিকাল ৩ টায় শান্তিপুর্ন বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের প্রস্তুতি চলছিল। এ অবস্থায় আ’লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীরা সমাবেশ বানচাল করার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র, রামদা, লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে বাধা প্রদান করতে থাকে।
এ সময় তাদের থামাতে গেলে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হককে মারপিট করে গুরুতর আহত করা হয়। তাৎক্ষনাত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সমাপ্ত করার পর নেতা কর্মীরা বাড়িফেরার পথে পুনরায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে বিএনপি কর্মী শহিদুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, খয়রুল, মুক্তারুল, নাজমুল হৃদা, রাব্বি ইসলাম, রবি মাহমুদ, জাহিদ, সিয়াম ও বাবুসহ প্রায় ২৫ জন আহত হয়।
এ সময় ৪টি মটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আ’লীগের সন্ত্রাসীরা দোকান-পাট, সমাবেশের মঞ্চ, চেয়ার, টেবিল, মাইক, পেন্ডেল, দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ করে মালামাল, গুরুত্বপুর্ন কাগজপত্র ও আসবাবপত্র জ্বালিয়ে দেয়। পুলিশের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে শান্তিপুর্ন সমাবেশে আ’লীগের সন্ত্রাসীদের এ ধরনের অতর্কিত ও বর্বোরচিত কর্মকান্ড প্রকৃতপক্ষে জণসাধারণের বাক স্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকারের প্রতি চরম ও নগ্ন আঘাত উল্লেখ করে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, সেই সাথে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম, আবু তাহের দুলাল, ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, ইউনুস আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: জাফর উল্লাহ, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাশেদ আলম লাবু, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমা পারভীন, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নূর, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, রুহিয়া থানা বিএনপির সভাপতি মোস্তফা কামাল, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি মো: সোহেল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: কায়েস, সাধারণ সম্পাদক সুমনসহ বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতা, কর্মী, সমর্থকবৃন্দ ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।