প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:৫২
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এক অত্যন্ত ইতিবাচক বার্তা নিয়ে এসেছে সাম্প্রতিক সময়ের রেমিটেন্স প্রবাহ। ২০২৪ এর আগস্ট থেকে, মার্চ ২০২৫ সময়কালে প্রবাসী আয়ে (রেমিটেন্সে) যে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এক কঠিন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জন্য এ অর্জন নিঃসন্দেহে একটি বড় স্বস্তির জায়গা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিপিএম ৬ পদ্ধতিতে হিসাব করা বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসেবে, এই কয়েক মাসে যে অতিরিক্ত রেমিটেন্স এসেছে, তা দেশের মোট রিজার্ভের প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমান। এটি একদিকে যেমন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়, অন্যদিকে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে তোলার সুযোগও তৈরি করে।
এই অর্জন শুধু পরিসংখ্যানের বিষয় নয়, বরং এটি বর্তমান সরকারের প্রতি প্রবাসী বাংলাদেশিদের আস্থা ও ভালোবাসার এক সুস্পষ্ট প্রতিফলন। সরকারের দূরদর্শী নীতি, প্রবাসীদের প্রতি সহমর্মী দৃষ্টিভঙ্গি এবং বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে নেওয়া নানামুখী উদ্যোগ প্রবাসীদের মনে নতুন করে আস্থা তৈরি করেছে। এরই ফলাফলস্বরূপ, প্রবাসীরা আগের তুলনায় অনেক বেশি আনুষ্ঠানিক চ্যানেল ব্যবহার করছেন এবং হুন্ডির মতো অবৈধ পথে অর্থ প্রেরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। এই পরিবর্তন বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও স্বচ্ছ করে তুলেছে।
তবে, এই ইতিবাচক ধারাকে টেকসই করতে হলে এখনই প্রয়োজন সময়োপযোগী নীতিমালা সংহত করা, বৈদেশিক শ্রমবাজারে আরও দক্ষ কর্মী পাঠানো এবং প্রবাসীদের কল্যাণে কার্যকর পদক্ষেপ জোরদার করা। একই সঙ্গে প্রবাসী আয়ের উপর নির্ভরশীলতাকে সুসংগঠিত করে দেশের উৎপাদনশীল খাতেও সমানতালে অগ্রগতি আনতে হবে।
রেমিটেন্স প্রবাহে এই শক্তিশালী অগ্রগতি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কেবল বর্তমান সংকট মোকাবেলায় সহায়তা করবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উন্নয়নের জন্য এক নতুন আশার সঞ্চার করবে। এখন সময়, এই গতি ধরে রাখার এবং অর্থনীতির প্রতিটি স্তরে এর ইতিবাচক প্রভাব ছড়িয়ে দেওয়ার।