প্রকাশ: ১ জুন ২০২৫, ১১:৬
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করে পানি বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা নদীতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যাতে নদীর অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে এবং সম্ভাব্য বন্যার ক্ষতি কিছুটা হলেও রোধ করা যায়।
শনিবার রাত ১০টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৮৬ মিটার, যা বিপৎসীমার মাত্র ৩০ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। এর মানে, পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটজনক অবস্থার দিকে যাচ্ছে এবং যেকোনো সময় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র পূর্বাভাস দিয়েছে যে রোববার ভোর নাগাদ পানির স্তর আরও ১৫ সেন্টিমিটার বাড়তে পারে। সেই হিসেবে তা বিপৎসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার নিচে থাকবে। তবে আশা করা হচ্ছে, এই বাড়তি প্রবাহ সাময়িক এবং এরপর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে।
তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবা পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা এক ধাক্কায় ১২০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। শুক্রবার রাত ৯টায় সেখানে পানির উচ্চতা ছিল ১১০ দশমিক ৩০ মিটার। তবে শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে সেখানে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে, যা বাংলাদেশ অংশে স্বস্তির বার্তা দিতে পারে।
একই সময়ে দেশের দোমহনী পয়েন্টে পানির উচ্চতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ দশমিক ৬৩ মিটারে, যা এখনও বিপৎসীমার নিচে থাকলেও তীব্র স্রোতের কারণে নদী তীরবর্তী এলাকা গুলোর জন্য সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে চরের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে কিংবা উজানে কোথাও বড় ধরনের বৃষ্টিপাত না হলেও আগের জমে থাকা পানি এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলই এই পরিস্থিতির কারণ। ফলে পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে নদীর পানি ধীরে ধীরে বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের সব গেট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং নদীর আশপাশে বসবাসকারী মানুষদের সতর্ক বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।