প্রকাশ: ১ জুন ২০২৫, ১০:৩২
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক নিবন্ধন অবশেষে ফিরে এসেছে। আজ রোববার উচ্চ আদালতের রায়ে দলটি তাদের পূর্বের নিবন্ধন পুনরুদ্ধার করেছে। বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল দলটির নিবন্ধন প্রশ্ন।
২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। সে সময় উচ্চ আদালত মনে করেছিল, দলটির গঠনতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এরপর থেকেই জামায়াত একাধিকবার আইনি লড়াই চালিয়ে গেছে তাদের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে।
আজকের রায়ে উচ্চ আদালত উল্লেখ করে যে, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়ায় কিছু সাংবিধানিক ও আইনগত অসঙ্গতি ছিল। আদালতের পর্যবেক্ষণে এসব বিষয় স্পষ্টভাবে উঠে আসে। ফলে আদালত সিদ্ধান্ত দেন, দলটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
তবে আদালত এই রায়ে প্রতীক সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দলটির প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে দেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে কমিশন পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত জানাবে।
নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ের পর এই রায় তাদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকচিহ্ন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রায়ের ফলে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে একটি নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতের সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ তৈরি হলো।
অন্যদিকে, কিছু রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার সংগঠন জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়াকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে। তারা মনে করে, এই সিদ্ধান্ত দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী শক্তিকে আবার রাজনৈতিক মঞ্চে জায়গা করে দেবে।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জামায়াতে ইসলামী এখন নিয়মিত রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে। তবে দলটি আদর্শিক ও গঠনতন্ত্রগত কিছু বিষয়ের পর্যালোচনায় কমিশন নজর রাখবে বলেও জানানো হয়।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদালত। এরই মধ্যে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে রায়টি নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।