বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে এক ভিন্নরকম শপথ নিচ্ছে ভারতের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। গুজরাটের সুরাতে বিভিন্ন প্রাইভেট স্কুলের ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী শপথ করছে যে, তারা বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ের পিঁড়িতে বসবে না। শহরকেন্দ্রিক হাসি থেরাপিস্ট কমলেশ মসলাওয়ালার চিন্তাভাবনার ফল এটি। তিনি নিজে ‘হাসির ক্লাব ও কান্নার ক্লাব’ নামে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। শহরের বেশি কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও সম্পৃক্ত মসলাওয়ালা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, যুবসমাজের কাউন্সেলিং করার সময়ে আমি এই ধারণা পেয়েছি। তারা বেশিরভাগ সময় সমস্যা নিয়ে আসে যে তাদের পরিবার তাদের প্রেমের বিয়ের বিরোধী। আমি প্রেমবিরোধী নই। কিন্তু আমি তাদের সঠিক কারণটা বোঝাই। পরিবারের গুরুত্ব তাদের কাছে তুলে ধরি এবং বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্বও তুলে ধরি। তাদের বাবা-মা হয়তো বিষয়টা মেনে নেবে কিন্তু তারা খুব কষ্ট পাবে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে শহরকেন্দ্রিক শিশু থেরাপিস্ট ড. মুকুল চকসির লেখা আট লাইনের কবিতা পাঠ করবে শিক্ষার্থীরা। গুজরাটি ভাষায় লেখা সেই কবিতায় বলা হয়েছে, ইশ্বরের দেওয়া আমাদের জীবনের এই উপহারকে আমরা ভালোবাসবো, শুধু আমাদের প্রেমকে নয়, আমাদের পুরো পরিবারকে ভালোবাসা উচিত। আমাদের সোমবার থেকে শুক্রবারও তাদের ভালোবাসা উচিত ঠিক সেভাবেই, যেভাবে শনিবার ও রোববার ভালোবাসি। আমাদের শিক্ষাকে ভালোবাসা উচিত যেটা জীবনের সত্যিকারের নির্যাস। শুধু একজনকেই কেন, আমাদের উচিত হাজার বিষয়কে ভালোবাসা। আমাদের স্কুল, কলেজ, শিক্ষক, অভিভাবক ও কাউন্সিলরকে ভালোবাসা দরকার। আমাদের ভালোবাসা দিবস বা বসন্ত পঞ্চমী ভালোবাসা উচিত। কিন্তু প্রথমত বাবা-মায়ের দেওয়া সেই সব মূল্যবোধকে ভালোবাসা উচিত।
মসলাওয়ালা বিভিন্ন স্কুলের ট্রাস্টির সঙ্গে যোগাযোগ করে এই আইডিয়া ভাগাভাগি করেছেন তাদের সমর্থন আছে কিনা জানান জন্য। তিনি জানান, অন্তত ২০টি স্কুল তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। স্কুলের সময় অনুযায়ীই স্কুল প্রাঙ্গণে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেটা ভিডিও বানিয়ে পরে আমাদের হাতে দিবে। পরে স্কুল ট্রাস্টি ও প্রিন্সিপালকে আপ্যায়ন করার জন্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আমাদের বার্তা হচ্ছে শিক্ষার্থীরা যেন বাবা মায়ের পছন্দ করা সঙ্গীকেই বেছে নেয়। আশা করছি ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভালোবাসা দিবসে এই শপথ নেবে। মসলাওয়ালা যোগ করেন, ১৭ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের এই আয়োজেনে অংশ নিবে। তবে সেটা বাধ্যতামূলক নয়। যারা শপথ নিতে চায় না তারা চাইলে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরা নিতে পারে। ক্লাব পরিচালনাকারী এনজিওর পরিচালক বিকাশ দোশি বলেন, কমলেশ মসলাওয়ালা যখন তার ধারণা আমাদের জানায় তখন আমরা তাকে সমর্থন দেবো বলে সিদ্ধান্ত নেই। আমরা সচেতনতা ছড়াতে চাই। তারপর বাকিটা শিক্ষার্থীদের উপর যে, তারা ভবিষ্যতে সেটা মানবে কি না। সুরাতে দুইটি শাখা থাকা স্কুল রেডিয়েন্ট ইংলিশ অ্যাকাডেমি স্কুল এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছে। স্কুলের প্রশাসক উল্লাস পাওয়ার বলেন, আমাদের দুটি শাখায় ক্লাস ৮-১২ পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার শিক্ষার্থী এই শপথ গ্রহণ করবে এবং ক্লাস ৬-৭ এর অন্তত ৬শ’ শিক্ষার্থী অংশ নেবে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।