প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৩:৩
ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালি ভাষাভাষী মানুষদের ওপর নিপীড়ন, হেনস্তা ও ‘বাংলাদেশি’ অপবাদ দেওয়ার অভিযোগে সোচ্চার হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশসহ একাধিক রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রেফতার, হুমকি ও নির্যাতনের অভিযোগে বুধবার কলকাতায় বৃষ্টিভেজা দুপুরে বিরাট প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করে দলটি।
কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। মিছিল শেষে মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, বাংলা ভাষাভাষীদের উপর এমন আচরণ মেনে নেওয়া হবে না। তিনি বলেন, যে বাংলা রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মভূমি, সেই বাংলা আজ
জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। এনআরসির নামে বাঙালিদের আটক ও ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মমতা আরও বলেন, বিজেপি একটি ভয়ংকর দল, যারা মানুষের মৌলিক অধিকারের ওপর আঘাত করছে। যারা বাংলায় কথা বলছে, তাদের জেলে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তৃণমূল এসব বরদাশত করবে না। তিনি বাংলার প্রবাসী শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, বাইরে গিয়ে অসম্মানিত হওয়ার চেয়ে বাংলায় ফিরে আসুন, সরকার পাশে থাকবে।
তিনি আরও দাবি করেন, হাজারেরও বেশি বাঙালিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অনেককে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, বাংলা থেকে শুরু করে গোটা দেশে আওয়াজ তুলবে তৃণমূল। জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের অবস্থান জানান দিয়ে বলেন, ২০২৬-এ বাংলা, এরপর দিল্লি—এই হবে তৃণমূলের পরবর্তী লক্ষ্য।
বাংলায় যদি সমস্যা তৈরি করা হয়, তিনি গোটা ভারত ঘুরে বিজেপিকে জবাব দেবেন বলেও ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই ওড়িশা সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মিছিল ঘিরে শহরে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল, যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়। মমতার এই কড়া বার্তা এখন জাতীয় রাজনীতিতে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।