ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ে সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে বলা হয়েছে, ‘১৩ লাখ ভারতীয় সেনাকে পাকিস্তান ভয় পায় না’। এই বক্তব্য ঘিরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে, যা দুই দেশের সামরিক এবং কূটনৈতিক মহলে নানান প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্থলবাহিনী, যার সদস্যসংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। তবে জানা গেছে, বর্তমানে সেনাবাহিনীতে ১ লাখেরও বেশি পদ খালি রয়েছে, যা সীমান্তে যেকোনো ধরনের সংঘর্ষ কিংবা যুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্প্রতি কাশ্মীরে এক মর্মান্তিক হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। যদিও তিনি সরাসরি পাকিস্তানের নাম নেননি, তবে অতীতে ভারত কাশ্মীরের জঙ্গি কার্যকলাপে পাকিস্তানের সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে।
ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী জানিয়েছেন, গত বছর কাশ্মীরে নির্মূল করা সন্ত্রাসীদের প্রায় ৬০ শতাংশই পাকিস্তানি নাগরিক ছিল। এ তথ্য আরও একবার দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাকে সামনে নিয়ে এসেছে।
এই প্রেক্ষাপটে ‘১৩ লাখ ভারতীয় সেনাকে পাকিস্তান ভয় পায় না’ এমন মন্তব্য ভারতীয় প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন হলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্য দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করতে পারে।
ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক বরাবরই জটিল ও সংঘাতপূর্ণ। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকে কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে দুই দেশ একাধিকবার যুদ্ধ এবং সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যে এমন মন্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে।
দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রয়োজনীয়তা যতই থাকুক না কেন, এ ধরনের বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। অব্যাহত উত্তেজনার মাঝেও বিশ্ব সম্প্রদায় উভয় দেশকে সংলাপ ও কূটনৈতিক পথে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর মনোবল এবং সক্ষমতা নিয়ে গর্বের জায়গা থাকলেও, প্রতিবেশী দেশের প্রতি দায়িত্বশীল এবং মিতব্যয়ী ভাষা ব্যবহারে সচেতনতা জরুরি। কারণ আঞ্চলিক শান্তি নির্ভর করে পারস্পরিক সংযম ও কূটনৈতিক বুদ্ধিমত্তার ওপর।