প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২০, ১৬:২৮
স্বাস্থ্য সহকারী মোঃ আনোয়ার হোসেনের টিকাদান কার্যক্রমের অবহেলার কারণে, বরিশালের হিজলা উপজেলার হিজলা গৌরব্দী ইউনিয়নের মান্দ্রা গ্রামের ২নং ওয়ার্ডে ধনুষ্টঙ্কারে আক্রান্ত হয়ে এক নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ধনুষ্টঙ্কারে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাটি একেবারেই ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ।ঘটনার বিবরণে জানা গিয়েছে , ১ আগস্ট শনিবার উক্ত গ্রামের তাহের মাঝি এবং সুমি আক্তার দম্পতির কোল জুড়ে মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। বাবা-মা আদরের সন্তানটির নাম রেখেছেন মরিয়ম বেগম। হঠাৎ করে ৬ আগস্ট শিশুটি অসুস্থ হয়ে যায়, বাড়িতে চিকিৎসায় ভালো না হলে ১০ আগস্ট শিশুটিকে হিজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
এরপর শিশুটির ধনুষ্টঙ্কারে আক্রান্ত হবার কথা জানতে পারে এই দম্পতি। শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটতে থাকলে সেদিনই বরিশাল শেবাচিমে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখানে ১১ আগস্ট মধ্য রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু ঘটে। পরে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে আরো জানা গিয়েছে , শিশুটির মা আদৌ কোনো টিকা পায়নি। যার কারণে ধনুষ্টঙ্কারে আক্রান্ত হয়ে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্য সহকারী মোঃ আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতার কথা স্বীকার করে বলেন, শিশুটির মা তাদের টিকাদান কেন্দ্রে এসেও টিকা গ্রহণ করেনি। তাছাড়া কেউ টিকা নিতে না চাইলে, তাকে জোর করে টিকা দেয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই তাদের।
এ ব্যাপারে কথা হয় হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মামুন অর রশিদ এর সাথে তিনি জানান, ধনুষ্টঙ্কারে শিশুটির মৃত্যুর পরে ঐ এলাকায় তারা শিশুটির ঘরের চারিদিকে আরো ৩০ টি ঘরের ১৫ থেকে ৪৯ বছরের মহিলাদের টিকার আওতায় এনেছেন। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঐখানে গিয়ে টিকা প্রদান করা হবে। এই ঘটনায় স্বাস্থ্য সহকারীর অবহেলা ছিলো কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এখানে কাউন্সিলিং এর অভাব রয়েছে।
তবে ঐ এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন, শুধু হিজলা গৌরব্দী ইউনিয়ন না, মেমানিয়া ইউনিয়ন, ধুলখোলা ইউনিয়ন এবং হরিনাথপুরের কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে যেখানে স্বাস্থ্য সহকারীর কার্যক্রম ধীরগতির হওয়ার কারণে অনেকেই টিকাদান থেকে বঞ্চিত। দুর্গম এলাকা গুলোতে শিশু মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই ঘটে। কোনোটার খবর জানা গেলেও বেশিরভাগ থেকে যায় অন্তরালে।