মৌলভীবাজারে সারের সিন্ডিকেট: কৃষক জিম্মি উচ্চমূল্যের ফাঁদে

জানা গেছে, ২০০৯ সালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘সার ডিলার নিয়োগ নীতিমালা-২০০৯’ তোয়াক্কা না করে শ্রীমঙ্গলের ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ডিলারশীপ প্রদান করা হয়। একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে লাইসেন্স দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক কোটা পূরণ করা হয়। এখনো এসব ডিলাররা প্রতি বস্তা ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি সারের জন্য ৪০০-৬০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে।

শ্রীমঙ্গলের ভুনবীর ইউনিয়নের কৃষক মহরম আলী বলেন, “সার চাইতে গেলে বলা হয় বরাদ্দ নেই। কিন্তু টাকা বেশি দিলে মিলছে। ১,৩৫০ টাকার সার ১,৮০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আবার রশিদও দেওয়া হয় না।”

কৃষকদের অভিযোগ, ইউনিয়নে বিক্রয়কেন্দ্র ও গুদাম না রেখে পৌর এলাকায় দোকান খোলা হয়েছে। ফলে পরিবহন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। অনেক সময় কৃষকদের কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে সার সংগ্রহ করতে হয়।

অভিযোগ রয়েছে, কিছু ডিলার একাধিক লাইসেন্সের নামে সার উত্তোলন করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। অনুকুল চন্দ্র দাশ নিজে ও তার ভাইয়ের নামে দুটি ডিলারশীপ চালান বলে স্বীকার করেছেন। একইভাবে কপালী পরিবার ও দেব পরিবারের একাধিক সদস্য ডিলারশীপ নিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন বলেন, “দীর্ঘদিনের সিন্ডিকেট ভাঙতে কাজ চলছে। যদি অনিয়ম প্রমাণিত হয়, ডিলারশীপ বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হবে।”

জেলা প্রশাসক ইসরাইল হোসেনও জানিয়েছেন, “যারা কৃষকদের হয়রানি করছে বা রাজনৈতিক বিবেচনায় ডিলার হয়েছেন, তদন্তে প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কৃষক সমাজ বলছে, এই সিন্ডিকেট ভাঙা না গেলে ন্যায্য দামে সার পাওয়া সম্ভব নয়। এতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।