প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২০, ১:২৫
ভোলার বোরহানউদ্দিনে লাবনী(২১)নামের এক মেয়েকে ডেকে নিয়ে রুবেল নামের তাঁর প্রেমিক কতৃক ধর্ষণ ও তাঁর পরিবার-পরিজন সহ হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার লাবনী স্থানীয় রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। ওই সময় লাবনীর পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেননি বলে অভিযোগ করেন। সেসাথে জনপ্রতিনিধিদের কাছে লাবনীর পরিবার বার বার ধর্ণা দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি বলেও তিনি অভিযোগ করেন। লাবনী উপজেলার কুতুবা ইউনিয়নের ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের রাজমিস্ত্রী মো. সিরাজের মেয়ে। রুবেল একই এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে।
লাবনী তাঁর বক্তব্যে জানান, রুবেলের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক আড়াই বছরের। এর মধ্যে আমাদের কথা-বার্তা, দেখা-শুনা হত। বিয়ের কথা বললেই রুবেল আর ক’টা দিন পরে বলে সময় নিত। প্রতিজ্ঞা করে আমাদের আংটি বিনিময় হয়েছে। ঈদ-উল-আযহার আগে ঢাকায় আমাদের বিয়ে হবে বলে আমাকে ঈদের ৪-৫ দিন আগে ঢাকা আসতে বলে। ঢাকা যাওয়ার জন্য গঙ্গাপুর ল ঘাটে এক লোকের মাধ্যমে ঢাকা যাওয়ার জন্য বিকাশে তিন হাজার টাকা পাঠায়। আমি লে ঢাকা চলে যাই। সদরঘাটে রুবেল আমাকে নিতে আসে। ওই স্থান থেকে আমাকে অসুবিধা আছে বলে আমার নাক-মুখ ঢেকে রাখে। ঢাকার কোন এলাকার একটি খালি বাড়িতে নিয়ে যায় তবে কোথায় এটা জানা সম্ভব হয়নি। বিয়ের কথা বললে সে একসাথে দেশে গিয়ে বিয়ে করবে বলে। ওই বাড়িতে আমি বাঁধা দেয়া সত্তে¡ও সে ৪ দিন আমাকে দৈহিক মিলনে বাধ্য করে। ঈদের আগের দিন আমরা উভয়ে দেশে ফিরে আসি।
ঈদের দিন আমাকে রুবেল তাঁর বাড়িতে যেতে বলে। বিকালে আমি ওই বাড়ি যাই। কিন্তু তাঁর পরিবারের লোকজন আমার দিকে তেড়ে আসলে আমি বাড়িতে চলে আসি। পরদিন সকালে সে ফোনে বলে বাড়ির সবাইকে ম্যানেজ করেছি। তুমি আমাদের বাড়িতে চলে এসো। আমি সরল মনে তাঁদের বাড়িতে যাই।
বাড়িতে ঢোকার পর-পর রুবেল, তাঁর বাবা-মা, ভাই-বোন সহ ৭-৮ জন ছেলে আমার উপর হামলা করে। যার হাতে যা ছিল তা দিয়ে আমাকে মারতে থাকে। এক সময় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। যখন জ্ঞান ফিরে তখন দেখি আমি হাসপাতালে। আমার সারা দেহ রক্ত জমে লাল হয়ে আছে। পরে জানতে পারি স্থানীয় কেরামত হাওলাদার ও সৈয়দ আহমেদ মোল্লা ওই বাড়ির পাশ দিয়ে যাবার সময় আমাকে আর না পিটানোর অনুরোধ করে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। পরে কিভাবে যেন খবর শুনে আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান জোবায়েদ আমাদের বাড়িতে আসেন। পুলিশ আসে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করা হবে বললে পুলিশ চলে যায়। আমরা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নেননি। চেয়ারম্যানের কাছে বার বার ধর্ণা ধরেও এখন পর্যন্ত কোন সমাধান পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়ের বাবা মো. সিরাজ ও মিনারা বেগম উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা তাঁদের মেয়ের উপর অত্যাচারের ন্যায় বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে প্রেমিক রুবেলের মোবাইল ফোনে(০১৭৮০-৩৬৫১২৯)নাম্বারে একাধিবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান সাদী জানান, হাসপাতালে আনার পর আঘাতের ফলে ওই রোগীর মাথা ফোলা পাওয়া যায়। এছাড়া পিঠ, মুখ, বাঁ কাধ, গলা সহ শরীরের বিভিন্ন অংশের চামড়া ছিলা ছিল। বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন জানান, মেয়েটির পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এফআইআর হয়নি। এখন যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।