প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২০, ১৫:২৭
শাহবাগ শিশু পার্কের অদূরে রমনা উদ্যানে তালাবদ্ধ প্রবেশ গেটে ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে রমনা পার্কে প্রবেশ নিষেধ, আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ’ সাদা কাগজে কালো রঙয়ে বড় বড় অক্ষরে লেমিনেটিং করা একটি সাইনবোর্ড ঝুলছে। ভেতরে রাস্তা দখল করে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে একটি কুকুর। পার্কের ভেতরে দু’একজন নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কেউ নেই। ভোর হয়েছে বেশ কিছুটা সময় আগেই। কিন্তু সূর্যিমামার দেখা নেই। মেঘের আড়ালে লুকিয়ে যেন নীরবে কান্না করছে। যুগ যুগ ধরে বাংলা নববর্ষের প্রথম প্রভাতেই রমনার বটমূলে প্রভাতী আয়োজন ‘ছায়ানট’ এর সরোদবাদন দিয়ে বর্ষবরণ করে নিতে কেউ নেই।
রমনা বটমূলের চৌহদ্দিজুড়ে সুনসান নীরবতা। জনশূন্য এ রমনা বটমূল একেবারেই অচেনা। বিবর্ণ নববর্ষের ভোর, যা দেখে অভ্যস্ত নয় বাঙালি জাতি।আজ মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ ১৪২৭ এর প্রথম দিন। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে কাকডাকা ভোর থেকে রমনা উদ্যান অভিমুখে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। আবালবৃদ্ধবনিতা নির্বিশেষে নতুন রঙিন পোশাক পরে রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে যোগদানের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষকে বরণ নেয়ার শুভ সূচনা করেন তারা। উপস্থিত সকলের মুখে উচ্চারিত হয় ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’।
ডিজিটালি বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে ‘উৎসব নয়, সময় এখন দুর্যোগ প্রতিরোধের’- এ প্রতিপাদ্যে এ বর্ষবরণের আয়োজন করা হয়েছে৷ ফলে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ মঙ্গলশোভাযাত্রা বের হবে না। শাহবাগ থেকে পল্টন মোড়, শেরাটন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে বাংলা একাডেমি ও কার্জন হল পর্যন্ত বৈশাখের মেলা বসবে না। থাকবে না পান্তা ইলিশের আয়োজন। শিশুদের কাঁধে নিয়ে বাবা-মায়েদের ঘুরে বেড়াতে দেখা যাবে না।