নতুন আইনে সরব চালকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৫ই নভেম্বর ২০১৯ ১১:১০ পূর্বাহ্ন
নতুন আইনে সরব চালকরা

চলতি মাসের শুরু থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন। নতুন এ আইন বাস্তবায়নে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোর প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এমনকি, নতুন আইনের সুযোগ নিয়ে যাতে প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা বিশেষ সুবিধা না নিতে পারেন, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। নতুন এ আইনে হেলমেট ব্যবহার থেকে শুরু করে ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে মোটা অংকের আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি রাখা হয়েছে বড় শাস্তির ব্যবস্থা। আর এতে করেই সরব হয়েছেন মোটরসাইকেল চালকসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা। ভিড় করছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে। আগের চেয়ে বড় শাস্তি ও বেশি জরিমানা থেকে রেহাই পেতেই গাড়ির নম্বর প্লেট, ফিটনেস সনদ ও লাইসেন্স সংগ্রহে দীর্ঘ লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছেন। হঠাৎ এমন বাড়তি চাপে কর্তৃপক্ষ হিমশিম খেলেও, বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিষয়টিকে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন আইন হওয়ার আগে বিআরটিএ অফিসে এতো লোকের সমাগম হতো না। কিন্তু নতুন আইনে বিদ্যমান শাস্তির ভয়ে পরিবহন মালিকা ও চালকরা সচেতন হতে শুরু করেছেন। তাই, নম্বর প্লেট, ফিটনেস সনদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহের জন্য আবদেন করতেই ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই। বিআরটিএ’র উপ-পরিচালক প্রকৌশলী শফিকুজ্জামান ভূঞা গণমাধ্যমকে জানান, ১ নভেম্বর থেকে নতুন আইন কার্যকর হওয়ায় চালকদের ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে গত দুদিন সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শাস্তির ভয়ে মালিক ও চালকরা সবধরণের কাগজপত্র ঠিক করতে ভিড় জমাচ্ছেন।  চালকদের মাঝে পরিবর্তন আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এই সেন্টারে (মিরপুর) দুটি ডিজিটাল মেশিন রয়েছে। তবে বিআরটিএ’র ভেতরে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে আরও ১২টি ফিটনেস পরীক্ষার মেশিন বসানোর কাজ চলছে। সেটা হলে এক সঙ্গে অনেক গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এতে চালকরাও স্বস্তিতে থাকবেন। আমরা চাই যানবাহনের সব কাগজপত্র আপডেট করেই সবাই রাস্তায় নামুক। 

এদিকে, বিআরটিএতে দালালের দৌরাত্ম কমাতে প্রশাসন সজাগ রয়েছে জানিয়ে আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) ওয়াহেদ মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, সাধারণ মানুষ যাতে কোনো ভোগান্তিতে না পরেন সে জন্য সজাগ রয়েছে প্রশাসন। তারপরও দালালদের দৌরাত্ম থেমে নেই। গত দু’দিনে অন্তত ১৪ জন দালালকে আটক করে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

এদিকে, গতকাল সোমবার এক ব্রিফিংয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আইন অমান্য করে কোনো ট্রাফিক পুলিশ যাতে অবৈধ সুবিধা নিতে না পারেন সে জন্য তাদের গায়ে ক্যামেরা লাগানো হবে। তবে প্রথম সপ্তাহে সচেতনতার জন্য সামান্য জরিমানা দিয়ে ট্রাফিক আইন চালু হবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, কোনো কর্মকর্তা যদি মামলা না দিয়ে অন্যকোনোভাবে সুবিধা নেন। আর কেউ যদি তা অভিযোগ করে এবং তা প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, মামলার ভয় দেখিয়ে কেউ অবৈধভাবে সুবিধা নিতে চাইলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাফিক পুলিশরা যাতে অবৈধ কাজে যুক্ত না হতে পারেন, সে জন্য প্রত্যেক ট্রাফিকের গায়ে ক্যামেরা লাগানো থাকবে। মামলা দেওয়ার সময় ছবি না তোলা থাকলে সেই ট্রাফিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর এ কর্তকর্তা।

ইনিউজ ৭১/এম.আর