অল্প খরচ আর পরিচর্যা ছাড়াই লাভজনক হওয়ায় পিরোজপুরে দিন দিন বাড়ছে আমড়া চাষ। যেকোন ধরণের ফল চাষ করতে চারা রোপনের পর অনেক পরিচর্যা করতে হয়। কিন্তু আমড়া চাষ এ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। গাছ রোপনের পর থেকে মাত্র ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে ফল পাওয়া যায়। আর এজন্য তেমন কোন পরিচর্যা দরকার হয় না। এছাড়া মৌসুমি এ ফলের বেশ চাহিদ এবং বাজার দর ও ভালো থাকায় পিরোজপুরে প্রতি বছর বাড়ছে সুস্বাদু এ ফলের চাষাবাদ।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা সহ সব উপজেলায় আমড়ার চাষাবাদ হলেও সদর উপজেলার কিছু অংশ, নাজিরপুর, কাউখালী, মঠবাড়িয়া নেছারাবাদ ও ইন্দুরকানীতে প্রচুর পরিমানে আমড়া চাষ হয়। নদী বেষ্টিত এ জেলার পানি মিষ্টি ও মাটি খুব উর্বর হওয়ায় এখানে উৎপাদন হয় সুস্বাদু এ আমড়া। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বরিশালের আমড়ার খুব কদর। মূলত বরিশালের আমড়া বলতে পিরোজপুর ও পার্শবর্তী ঝালকাঠি জেলার আমড়াকেই বুঝায়। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে পিরোজপুরে আমড়ার চাষ হলেও, ১০ থেকে ১২ বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে সুস্বাদু ক্যারোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ এই ফল।
বর্তমানে রাস্তার দুই ধারে পরিত্যক্ত স্থানে আমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছেন আমড়া চাষীরা। আমড়ার চাষীরা জানান, বড় ধরণের ঝড়ে আমড়া গাছ ভেঙে না পড়লে, এই ফসলের আর তেমন কোন ক্ষতির আশংকা নাই। এছাড়া আমড়া বিক্রি করার জন্য তেমন একটা সমস্যায় পড়তে হয় না। আমরা ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে আমড়া কিনে নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অ লে বিক্রি করেন। ল এবং ট্রাকে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়ায়, সহজেই এই ফলগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো যায়। আমড়া চাষী শহিদ জানান, অন্যান্য যে কোন ফলের চেয়ে আমড়া সংরক্ষণ করা যায় বেশি সময়। আর এর ফলে কোন প্রকার রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না বিধায় এটা খুবই স্বাস্থ্যসম্মত।
পিরোজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হেনা মোহাম্মদ জাফর জানান, একটি গাছ থেকে প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত বছরে গড়ে ৫ মণ আমড়া পাওয়া যায়। আর হেক্টর প্রতি আমড়ার গড় উৎপাদন ২০ টন। পাইকারি বাজারে প্রতি মণ আমড়া বিক্রি হয় ৯০০-১০০০ টাকায়। এ বছর জেলায় ৫০০ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষ হয়েছে যা গত বছর ছিল ৪৯৩ হেক্টর। তবে পিরোজপুরে দিন দিন আমড়া চাষ বাড়ছে। আর পরিকল্পিতভাবে আমড়া চাষের জন্য চাষীদের যথাযথ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।