৪৩ ওয়ার্ডে আসছে নতুন কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৩০শে জুলাই ২০১৯ ১১:৫১ পূর্বাহ্ন
৪৩ ওয়ার্ডে আসছে নতুন কমিটি

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড দীর্ঘদিন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ। এসব মেয়াদোত্তীর্ণ ওয়ার্ড কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব আনতে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়েছে নগর আওয়ামী লীগ। আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২১ অক্টোবর এই সম্মেলন শেষ হবে। তবে সম্মেলনে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ। আর কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে কাউন্সিলরদের গোপন ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। এ পরিস্থিতিতে ওয়ার্ড কমিটিতে নিজেদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ঠাঁই পেতে জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছে দেনদরবার চালাচ্ছেন ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতারা।  নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। আর এর আগেই প্রথমে ৪৩টি ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষে পরবর্তী সময়ে একইভাবে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন ১৫টি থানা কমিটির সম্মেলন করা হবে। ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সম্মেলন করতে চলতি মাসের বিভিন্ন সময়ে পৃথকভাবে সভাপতিম-লী ও সম্পাদকম-লীর সভা এবং বর্ধিত সভা করেছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ। ওই সভাগুলোতে উপস্থিত নেতাকর্মীরা মেয়াদোত্তীর্ণ সব ওয়ার্ড ও থানা কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন। এদিকে ২২ জুলাই অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভার পর থেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা নগর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছে কাক্সিক্ষত পদের জন্য ধরনা দিচ্ছেন। রাষ্ট্রীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানেও ওয়ার্ড পর্যায়ের পদপ্রত্যাশী এসব নেতাকর্মীর আনাগোনা বেড়েছে।

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, চট্টলবীর হিসেবে পরিচিত প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্র থেকে ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার শূন্য হওয়া পদে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মহিউদ্দিন-নাসির ও মাহতাব-নাসির কোনো কমিটিই এখন পর্যন্ত নগরের কোনো ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনায় গত বছরের ২৭ জুলাই নগরের সাতটি ওয়ার্ডে থাকা দ্বৈত কমিটিগুলো ভেঙে দিয়ে প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে বাকিগুলোতে আর কোনো কমিটি গঠন করতে পারেনি নগর কমিটি। ফলে বাধ্য হয়ে দীর্ঘদিনের পুরনো কমিটি দিয়েই ওয়ার্ডগুলোতে চলছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। তবে নগরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। এর মধ্যে একটি অংশ সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এবং অন্যটি প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীরা বর্তমানে তার জ্যেষ্ঠপুত্র কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের পেছনে রয়েছেন।

নতুন ওয়ার্ড কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন ৪৩টি ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় মেয়াদোত্তীর্ণ সব ওয়ার্ড ও থানা কমিটিতে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৪৩ ওয়ার্ডে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। নতুন এসব কমিটিতে দলের জন্য নিবেদিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের ঠাঁই হওয়া প্রয়োজন। কে কোন গ্রুপ সে বিষয়টি বিবেচনায় না এনে সবার মতামতের ভিত্তিতেই ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হবে।’ সম্মেলনে কোন প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন করা হবে জানতে চাইলে নাছির আরও বলেন, ‘বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রথমে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে কোনো দ্বিমত হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে গঠিত কাউন্সিলরদের গোপন ভোটের মাধ্যমে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হবে।’

ইনিউজ ৭১/এম.আর