দু'সপ্তাহ আগেও আর দশজনের মতো হাসিখুশি ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। কিন্তু হঠাৎ করেই তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়; কালো মেঘে ঢেকে যায় চতুর্দিক। নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের লালসার শিকার হয়ে একপর্যায়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হয় তাকে। অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন রাফি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাফি আর কখনো পরিবারের সবার কাছে ফিরতে পারবে না জেনেই হাসপাতালে অবস্থান করা রাফির ভাই ও বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ইতোমধ্যেই জানা গেছে, রাফির মরদেহ সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়নের উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এর আগে গত পাঁচ দিন ধরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন রাফি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার নির্দেশ দিলেও শারীরিক অবস্থার কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছিল না।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।