প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এই নতুন শুল্ক ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিভিন্ন দফায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন এই আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানও এই প্রতিনিধিদলে রয়েছেন।
বাংলাদেশি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক দফায় বৈঠক সম্পন্ন করেছে। ৯ জুলাই আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে শেখ বশিরউদ্দিন বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন। এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে যৌক্তিক ও লাভজনক শুল্ক সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।
ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত আসার আগে এপ্রিল মাসে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল বাংলাদেশি পণ্যের ওপর, যা পূর্বের গড় ১৫ শতাংশের থেকে অনেক বেশি। গত তিন মাস ধরে বাংলাদেশ এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৩৫ শতাংশের শুল্ক আরোপ বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে গার্মেন্টস, চামড়াজাত ও কৃষিপণ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে এটি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে বাণিজ্য আলোচনায় দ্রুত সমাধান পাওয়ার চেষ্টা চলছে যাতে দুই দেশের অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা দলের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আলোচনার লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করা এবং শুল্কের বিষয়টিতে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো।
বর্তমানে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি খাত দ্রুত বিকাশ লাভ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় বাজারে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে রপ্তানিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিকল্প বাজার খুঁজে পাওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্য নীতিতে আরও স্থিতিশীলতা আনার পরিকল্পনা করছে।
বাংলাদেশের সরকার ও বাণিজ্যিক মহল এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় একজোটভাবে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের রপ্তানি খাতের উন্নতি নিশ্চিত করতে তারা সচেষ্ট।
বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্ক বৃদ্ধি হওয়ার এই সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের জন্য সঠিক কৌশল গ্রহণ অপরিহার্য, যাতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বজায় রাখা যায়।