ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ৯৯ নম্বর উত্তর পূর্ব ছোট কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানমকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। সোমবার (৭ জুলাই) তাকে এ নোটিশ প্রদান করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে “তিন ক্লাসে পাঁচ শিক্ষক, ছয় শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়” এবং “ল্যাপটপ প্রধান শিক্ষকের বাসায়, ব্যবহার ব্যক্তিগত কাজে” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বিদ্যালয়টির নানান অনিয়ম, শিক্ষার্থী সংকট এবং সরকারি সম্পদের অপব্যবহারের চিত্র উঠে আসে।
প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ছয়জন, অথচ শিক্ষক রয়েছেন পাঁচজন। আরও অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ বাসায় নিয়ে গেছেন এবং তা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের কোনো ব্যবহার নেই।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গত ৩ জুলাই দুপুর ২টার দিকে এক সাংবাদিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখেন, ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৪ জন উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ২টা ১৫ মিনিটেও প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি লেখা হয়নি। উপরন্তু বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ বাসায় নেওয়ার বিষয়টিও নোটিশে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে।
এ ঘটনায় শোকজ নোটিশে বলা হয়, সরকারি দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না, তা লিখিতভাবে তিন কর্মদিবসের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, বিদ্যালয়টিতে কাগজে-কলমে ৫১ জন শিক্ষার্থী থাকলেও, বাস্তবে উপস্থিত থাকে ১০-১৫ জন। শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। এমনকি শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে নিজেরা আগে চলে যাওয়ার অভিযোগও আছে।
রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতার হোসেন জানান, “বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষককে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তার জবাব পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, বছরের পর বছর এভাবে অনিয়ম চললেও তা ছিল নজরবিহীন। সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি সামনে আসে।