চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশ অস্থির হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান রয়টার্সকে বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত নির্বাচন না দিলে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে ফিরে আসতে চায় এবং নির্বাচন বিলম্বিত হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ক্ষমতায় আসে এবং বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু বিএনপি এতদিন অপেক্ষা করতে চায় না।
বিএনপির নেতা আব্দুল মঈন খান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে যে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া এবং সম্মানজনকভাবে ক্ষমতা ছাড়া তাদের জন্য ভালো হবে। তিনি বলেন, সাধারণত ডিসেম্বরেই তফসিল ঘোষণা করা হয়, এর পরে নির্বাচন বিলম্বিত হলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠবে।
ছাত্রনেতা ও সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি, তাই এই বছর নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হতে পারে। তবে বিএনপি মনে করে, দেরি হলে গণতন্ত্রে ফেরার সুযোগ কমে যাবে এবং জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়বে।
ওয়াশিংটনে এক আলোচনায় আব্দুল মঈন খান জানান, তিনি মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে চান এবং বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, বিএনপি কোনো নির্দিষ্ট জোটের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করেনি, তবে নির্বাচনের পরে ছাত্রনেতৃত্বাধীন জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, বিএনপি চায় যারা গণতন্ত্রের পক্ষে আছে, তারা সবাই একসঙ্গে কাজ করুক। নির্বাচিত হলে বিএনপি একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের পরিকল্পনা করছে এবং এ বিষয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কথা বলবে।
বিএনপির এই হুঁশিয়ারি এবং নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে। অনেকে মনে করছেন, নির্বাচন নিয়ে দেরি হলে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, যা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য ভালো হবে না।
সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে নির্বাচন কীভাবে এবং কবে হবে, তা নিয়ে আগামী মাসগুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।