প্রকাশ: ৮ জুলাই ২০২৫, ২০:৪
বাংলাদেশের আগামীর পথচলায় তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বাংলা একাডেমিতে ‘সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস–২০২৫’ প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্ম আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক এগিয়ে গেছে, এবং তারাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে গড়ে তুলবে। তিনি জানান, তরুণদের মেধা ও নেতৃত্বে দেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য হলো, এখানে গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি। পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা খুব সীমিত ছিল। মাঝেমধ্যে কিছুটা হলেও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। আজকের দিনে তরুণদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনা জাগ্রত হচ্ছে—এটাই দেশের জন্য আশাব্যঞ্জক।
এক জরিপের ফল তুলে ধরে মির্জা ফখরুল জানান, মাত্র ১.৮৭ শতাংশ তরুণ রাজনীতিতে আগ্রহী বলে দেখা গেছে, যা হতাশাজনক। তবে তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে এসে সেই হতাশা কেটে গেছে, কারণ তরুণদের মধ্যে যে উদ্দীপনা, চিন্তা ও নেতৃত্বের সম্ভাবনা তিনি দেখেছেন, তা অত্যন্ত ইতিবাচক।
বাকস্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন, মতের ভিন্নতা থাকবে, তর্ক-বিতর্ক থাকবে—এই ব্যবধানই গণতন্ত্রকে পূর্ণতা দেয়। তিনি বলেন, ‘আমি কথা বলব, তুমিও কথা বলবে—এই মনোভাবই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’
১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ভারতের এক মুখ্যমন্ত্রী একাই মানুষের সঙ্গে মিশতেন, অথচ আজকের বাংলাদেশে একজন মন্ত্রী হলেও তাকে ঘিরে গাড়ি ও নিরাপত্তার জটলা তৈরি হয়। এই অবস্থা থেকে বের হয়ে এসে সাধারণ মানুষের মতো ভাবতে শিখতে হবে।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা একটি নতুন প্রজন্ম, একটি শক্তিশালী সামাজিক আন্দোলন তৈরি করতে চাই, যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের আগামী পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হবে এই তরুণ সমাজ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক হেলথ স্পেশালিস্ট ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম ইলিয়াস, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু এবং আইনজীবী রাশনা ইমামসহ বিভিন্ন বিশিষ্টজনেরা।
এই আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের মেধা, নেতৃত্ব এবং দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে আয়োজকরা মনে করছেন এবং ভবিষ্যতে এমন অনুষ্ঠান আরও বিস্তৃতভাবে করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।