আশাশুনিতে সজিনা গাছে ফুলের সমারোহ, বাম্পার ফলন আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: সোমবার ৩রা মার্চ ২০২৫ ০২:৪৩ অপরাহ্ন
আশাশুনিতে সজিনা গাছে ফুলের সমারোহ, বাম্পার ফলন আশা

আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সজিনা গাছ সাদা ফুলে ভরে গেছে। গাছগুলোর ডাল থেকে মাথা পর্যন্ত থোকা থোকা সাদা ফুলে শোভিত, আর এতে ফুলের সৌন্দর্য্যে মনমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সজিনা গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়তে শুরু করেছে, যার ফলে পাতাশূন্য গাছে সাদা ফুলের শোভা যেন আরও বেশি চোখে পড়ছে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বসত বাড়ির উঠান, রাস্তার ধারে এবং পতিত জমির আইলে সজিনা গাছ ব্যাপকভাবে রোপিত হয়েছে। অধিকাংশ বাড়িতে কমপক্ষে ১/২টি সজিনা গাছ রয়েছে এবং এগুলো যতœ ছাড়াই বেড়ে উঠেছে।


সজিনার ফুল জানুয়ারির শেষ থেকে আসা শুরু করে এবং বারো মাসি সজিনার গাছে বছরে কয়েকবার ফুল আসে। তবে সব ফুল থেকে ফল হয় না। এক একটি বড় সজিনা গাছে ৪০০ থেকে ৫০০ ফল ধরে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সজিনা গাছের শাখা বা ডাল রোপণ করা হয় প্রতি বছর। তবে রোপণকৃত ডালের প্রায় ৩০ শতাংশ মারা যায়। আশাশুনি উপজেলায় দুই ধরনের সজিনা গাছ পাওয়া যায়, একটি হালো সিজিনাল এবং অন্যটি বারো মাসি সজিনা।


সজিনা গাছের ফুল, পাতা, শিকড়, ছাল – এসবের ভেষজ গুণ রয়েছে। সজিনা একটি পুষ্টিকর সবজি হিসেবে পরিচিত, এবং এটি সুপার ফুড হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সজিনা গাছের পাতা খাওয়া ছাড়াও, গাছের শেকড় ও ছাল ভেষজ চিকিৎসায় ব্যাপক ব্যবহার হয়। সজিনার ব্যাপক চাহিদা ও উচ্চ মূল্যের কারণে উপজেলাবাসী পতিত জমিতে পরিকল্পিতভাবে সজিনা চাষ শুরু করেছেন। সজিনা চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।


কৃষি অফিস জানায়, সজিনা গাছ বাংলাদেশের সর্বত্রই জন্মায় এবং এটি ঠান্ডা, গরম, খরা সহিষ্ণু। সজিনার ফুলের ব্যাপক উৎপাদন হওয়ায় কৃষকরা আশাবাদী, এবং আগামী বছর সজিনার বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। চাষী দেবব্রত বসাক জানিয়েছেন, সজিনা গাছ শুষ্ক এবং কম উর্বর মৃত্তিকায়ও ভালোভাবে জন্মাতে পারে। সজিনার পুষ্টিগুণের জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা রয়েছে, এবং সজিনা চাষ কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করতে পারে।


সজিনা চাষকে আরও সম্প্রসারিত করতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা হলে, এটি আশাশুনি উপজেলার অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করেন কৃষকরা।