প্রকাশ: ৬ জুন ২০২৪, ৪:৭
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থের মোড়কে কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক সুযোগ আবারো ফিরিয়ে আনায় বিস্ময় ও ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটির দাবি, মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার এই সুবিধা সৎ ও বৈধ আয়ের ব্যক্তি করদাতাকে নিরুৎসাহিত করবে। পাশাপাশি অপ্রদর্শিত সম্পদের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন করার সুযোগ না রাখায় দেশে দুর্নীতি সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
এমন বাস্তবতায় কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে টিআইবি।
বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) বিকেলে সংসদে বাজেট উত্থাপনের পর সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে টিআইবি এ দাবি জানায়।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “ডেটা ভেরিফিকেশন সিষ্টেম বা ডিভিএস” চালু করার ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ ঘোষণায় আইনি জটিলতা এবং করদাতাদের অজ্ঞতার দোহাই দিয়ে যেভাবে “অপ্রদর্শিত অর্থে” ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা জমি কেনা বৈধ করার ঢালাও সুযোগ দেয়া হলো- তা সত্যিই হতাশার। কালো টাকাকে সাদা করার এমন সুযোগ দেওয়ার নিশ্চয়তা প্রদানের মাধ্যমে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জন করতে যেন সরকারিভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সহজ করে বললে, সরকার দায়মুক্তির নিশ্চয়তা দিয়ে প্রকারন্তরে নাগরিককে দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
রাজস্ব বাড়ানোর খোড়া যুক্তিতে দুর্নীতি ও অনৈতিকতার গভীরতর ও ব্যাপকতর বিকাশকে স্বাভাবিকতায় পরিণত করা হচ্ছে।
মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিপরীতে সৎ করদাতাদের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ কর দেওয়ার বিধান বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিয়েছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি একজন সুনাগরিকের প্রতি বৈষম্যমূলক, একইসঙ্গে তা সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। এ প্রক্রিয়ায় নৈতিক আপস করে প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায়ের স্বপ্ন স্বল্প কিংবা দীর্ঘমেয়াদে কখনোই বাস্তবায়িত হবে না।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রদানের দীর্ঘদিনের অসাংবিধানিক চর্চা বন্ধ করার এখনই উপযুক্ত সময় মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরো বলেন, ‘শুভবুদ্ধি, দূরদৃষ্টি, সংবিধান ও আইনের শাসনের প্রতি সরকার আনুগত্য দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাহার করে নেবে-এমনটাই আশা। একইসঙ্গে, কালো টাকার মালিকদের সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের মাধ্যমে কার্যকর জবাবদিহিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে দুর্নীতির মহোৎসবের হ্রাস টেনে ধরা যায়।’