ভোটের সময় ইসির নির্দেশনায় চলবে পুলিশ : নতুন আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:২২ অপরাহ্ন
ভোটের সময় ইসির নির্দেশনায় চলবে পুলিশ : নতুন আইজিপি

র‍্যাবের বিদায়ী মহাপরিচালক ও নতুন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় পুলিশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনায় চলবে।


বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ কথা বলেন। 


দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সময় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ আছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। নতুন আইজিপির কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল- আসন্ন নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা এবং ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে কাজ করার যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে কীভাবে পদক্ষেপ কী নেওয়া হবে।


জবাবে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুলিশ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। এ বিষয়ে বাহিনীর দীর্ঘদিনের যে অনুশীলন তা মেনে চলবে। একই সঙ্গে সামনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবো।


নিষেধাজ্ঞার কারণে র‌্যাব বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ার কমিয়ে দিয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সদ্য বিদায়ী র‌্যাব মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘তোমরা এদেশের পুলিশ, এদেশেরই নাগরিক’। আমাদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কেন আমরা দাঁড়াবো। যখন আমরা আক্রান্ত হই, মাদক, অস্ত্র উদ্ধার, মানবপাচারকারী যখন আমাদের ওপর আক্রমণ করে তখন আমরা প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আইনে যে ক্ষমতা র‌্যাবকে দেওয়া হয়েছে তা আমরা অতিক্রম করি না।


র‌্যাব ডিজি হিসেবে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালন শেষে আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে যোগ দেওয়ার আগে আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, যেখানে প্রয়োজন হয় সেখানেই শক্তি প্রয়োগ করি। যেখানে প্রয়োজন হয় না সেখানে করি না। একটা লোক দৌড় দিলো, ধাক্কা দিলো আর গুলি করে দিতে হবে? সিচুয়েশন যে ডিমান্ড করে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আমাদের দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।


মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে র‌্যাব। কিন্তু মাদক বাড়ছে মাদকসেবীও বাড়ছে। তাহলে মাদকের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান ব্যর্থ কি না?


এমন প্রশ্নে নতুন আইজিপি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা যে যুদ্ধ করছি সেটা বৈশ্বিক যুদ্ধ, এ যুদ্ধ শুধু আমরা না, বিশ্বজুড়েই চলছে। আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাজের কারণে কারাগারে যে আসামি তার বেশিরভাগই মাদকের। প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের পর যেখানেই মাদক সেখানেই সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শুধু র‌্যাব নয়, সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তাদের ধরছে। মাদকের বিষয়ে সবার ঘর থেকেই সচেতনতা দরকার। সন্তান কোথায় যাচ্ছে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে অভিভাবকদের।


তিনি বলেন, ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাই একটার সঙ্গে আরেকটা জড়িত। এটা বন্ধে আমরা কাজ করছি। মাদক নিয়ন্ত্রণে নেই, এটা বলার অবকাশ নেই। যেখানেই খবর পাচ্ছি সেখানেই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা যদি মাদকের বিরুদ্ধে ব্যর্থই হতাম তাহলে কারাগারে এতো মাদকের আসামি থাকতো না। আমরা সবাই সোচ্চার হলে শিগগির মাদকমুক্ত সমাজ দেখতে পাবো বলে বিশ্বাস করি।


র‌্যাবের সদ্য বিদায়ী এই ডিজি জানান, তার সময়কালে ৩৬ হাজার মাদক কারবারিকে গ্রেফতার, ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং ৭৭ হাজার বোতল মাদকের চালান জব্দ করা হয়েছে।


মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন র‌্যাবের মিডিয়া ও লিগ্যাল উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনসহ র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।