মায়ের মমতা নিয়ে’ রাষ্ট্র পরিচালনা করলে জনগণ অবশ্যই সমর্থন করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মঙ্গলবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দুবাই এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত ‘রিডিফাইনিং দ্য ফিউচার অব উইমেন’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, নারী কেবল নারী নয়। নারীরা হলেন মা, এ বিষয়টি আমাদের সকলকে অনুধাবন করতে হবে। আর মায়ের মমতায় নিয়ে যদি আপনি রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, অবশ্যই জনগণ আপনাকে সমর্থন দেবে।
তিনি বলেন, আমাদের পুরুষরা দুর্বল? না তা নয়। তারা খুব কো-অপারেটিভ। আমি অবশ্যই বিষয়টির প্রশংসা করি।স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি সংবিধান দেন। সেই সংবিধানে বলা হয়েছে, নারী ও পুরুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমি যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখলাম কোথাও নারীর কোনো জায়গা ছিল না। তারা ছিল পুরোপুরি অবহেলিত।নারীদের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এভাবেই আমি জনগণের সমর্থন অর্জন করেছি। জনগণের সমর্থন, জনগণের বিশ্বাসই আমার মূল শক্তি।জনগণ অনুভব করে যে আমি যদি এখানে থাকি (রাষ্ট্র ক্ষমতায়), অবশ্যই তারা লাভবান হবে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ দিনের সরকারি সফরে সোমবার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের (বিজি-১৩০১) একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট সোমবার সন্ধ্যায় আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর।
বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয় এবং ২১ সদস্যের একটি চৌকস দল তাঁকে স্যাটিক গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এমপি, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি এমপি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রধানমন্ত্রী আজ দুবাই এক্সিবিশন সেন্টার (ডিইসি) পরিদর্শন করেন এবং আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে একটি শীর্ষ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। পরে, তিনি ডিইসিতে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন এবং ইউএই প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন।
সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডিইসিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ৯ মার্চ শেখ হাসিনা আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল-নাহিয়ান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাদার অব নেশন শেখ ফাতিমা বিনতে মুবারকের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সন্ধ্যায় তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফরের দেওয়া অভ্যর্থনায় নৈশভোজে যোগ দেবেন।
এ ছাড়া ১০ মার্চ সকালে প্রধানমন্ত্রী এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সংক্রান্ত এফএও আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে এবং সন্ধ্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের উদ্যোগে যৌথভাবে আয়োজিত বিজনেস ফোরামে যোগ দেবেন। শেখ হাসিনা সফরের শেষ দিনে ১১ মার্চ প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে একটি নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
এ ছাড়াও, তিনি রাস আল খাইমায় বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-১৩০২-এর একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।